শৈল শহরের রানীর দেশে; দার্জিলিং

হাতে দিনকয়েকের ছুটি? দেরী না করেই বেরিয়ে পড়ুন শৈল শহরের রানীর দেশে, হ্যাঁ একেবারে দার্জিলিং। শহরের কোলাহল আর অফিসের একগাদা কাজের চাপে প্রাণ হাঁসফাঁস হয়ে উঠলে প্রাণ ভরে খোলা হাওয়া আর সবুজের মাঝে চোখ জুড়ানো সাথে বরফের প্রতিবেশী ; অপূর্ব কাঞ্চনজঙ্ঘা।

তবে দার্জিলিংয়ে থেকে কিকরে নিরিবিলিতে দিন কাটাবেন? আজ এমনই এক জায়গার সন্ধান দেব আপনাকে। টাইগার হিল যেতেই পারেন তবে তারপর মিক্স পয়েন্ট, রক গার্ডেন, বাতাসিয়া লুফ এসব দেখে নিয়ে আপনি নিরিবিলিতে সময় কাটাতে এবং অপূর্ব প্রকৃতির সৌন্দর্য দেখতে তারপর আপনি চলে যান দার্জিলিংয়ের মধ্যেই অবস্থিত গ্রামগুলিতে। যেমন ধরুন তাকদা, তিনচুলা, লপচু (লেপচু), লামাহাটা।

আপনি আপনাদের বলব তাকদা বা তিনচুলায় থাকার কথা। তিনচুলা থেকে আপনি সিংহভাগ দার্জিলিং দেখতে পাবেন। একেবারে তিস্তা নদীর স্রোতও। এখানে পাবেন কটেজ, সরকারি কিছু কটেজ ও আছে৷ ফুডিং প্লাস লজিং পাবেন এবং শুধু লজও পাবেন। এত পর্যটকের কোলাহলের মাঝে এ যেন এক অন্য সবুজের দেশ, যেখানে শুধুই আপনি আর শুধুই দার্জিলিং।

এই কটেজগুলিতে রান্নার ব্যবস্থাও আছে। গাড়ি নিয়ে বেশি ওঠানামা না করে গাড়িতেই ঘুরে নিন একের পর এক গ্রাম, বাড়িতে রান্না না করেও খেয়ে নিতে পারেন তিনচুলায় থাকা কিছু ভালো হোটেলে যেখানে অত্যন্ত সুস্বাদু খাবার মিলবে মাত্র ১৫০ টাকায় (ভেজ) (নন ভেজও পাবেন)। চোখ মেললেই মাইল মাইল চা বাগান, কখনও দেখবেন অতি বয়স্ক মানুষ ঝুপ ঝুপ করে হেঁটে চলেছে জনমানবহীন রাস্তা ধরে আবার কোথাও দেখবেন মাথার সাথে টান দিয়ে পিঠে ভারী বোঝা নিয়ে কেউ কেউ হেঁটে চলেছে বাজারের দিকে।

এখানে প্রায় সব মানুষই কাজ করে খায়, মহিলারাতো আরোও বেশি৷ বয়সের ভার নুইয়ে দেয়নি তাদের, বরং আরোও শক্ত করেছে। পাহাড়কে এরা খুব ভালোবাসে। কোথায় রাস্তা একটু খারাপ হলেই করে দেওয়া হচ্ছে মেরামতি। তাকদা তিনচুলায় দুদিন কাটিয়ে লপচু, লামাহাটা ঘুরে চলে আসুন দার্জিলিং ম্যালে যেখান থেকে আপনি ফিরে আসবেন শিলিগুড়ি (নিউ জলপাইগুড়ি)। এখানে শেয়ার গাড়িতে অত্যন্ত কম খরচে আপনি ফিরতে পারবেন শিলিগুড়ি।

দার্জিলিং গিয়ে ম্যালের কাছে থাকুন। ম্যালে অনুষ্ঠান হয়, দুপাশ দিয়ে বসেছে একরাশ খাবারের দোকান, এছাড়াও বড়ো বড়ো মার্কেটে একরাশ মানুষের সমাগম। এখানের বিভিন্ন এজেন্সি থেকে গাড়ি নিয়ে ঘুরো নিতে পারেন পুরো দার্জিলিং। তারপর দিন দুয়েক বা তারও বেশি দিন নিরিবিলিতে সময় কাটিয়ে পারেন তাকদা, তিনচুলাতে।

রাস্তা বিবরণঃ হাওড়া, কলকাতা, শিয়ালদহ থেকে আপনি ট্রেনে যাবেন নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন ওখানে সামনেই লজ পাবেন। ভালো বেশ পরিষ্কার। খানিক জিরিয়ে ওখান থেকেই আপনি পেয়ে যাবেন বুকিং গাড়ি সেখানে ভাড়া একটু বেশি (২৫০০) শেয়ার গাড়িতেও যেতে পারেন মাথাপিছু ভাড়া পড়বে ২০০ টাকা। তবে শিলিগুড়ি বাসস্ট্যান্ড থেকে গেলে গাড়ির ভাড়া একটু কমবে। বাসে লাগবে মাথাপিছু ১০৫ টাকা আর শেয়ার গাড়িতে ১৫০ টাকা মাথাপিছু, ওখান থেকেও বুকিং গাড়িতে যেতে পারেন ঐ ২০০০ টাকা পড়বে। এছাড়া আপনি টয়ট্রেনেও যেতে পারেন খরচ একটু বেশি ৮০০ মাথাপিছু।

মাসানুর রহমান

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*