জম্মুর পূর্ণিয়াতে বৈষ্ণদেবীর গুপ্ত কালী মন্দিরে ১০৮টি দেব-দেবীর পুজো হয়, পড়ুন বিস্তারিত!

জম্মুর পূর্ণিয়াতেও রয়েছে বৈষ্ণদেবীর গুপ্ত কালী মন্দির ৷ এই গুপ্ত কালী মন্দিরে বৈষ্ণদেবীর সঙ্গে রয়েছে আরও অনেক দেব-দেবী ৷ জানা যায়, সতীর ৫২ পীঠের মধ্যে এটিও একটি পবিত্র পীঠ ৷ গুপ্ত কালী মন্দির নামে খ্যাত এই মন্দিরে মোট ১০৮টি দেব-দেবীর পুজো হয় ৷ ভক্তদের বিশ্বাস এই মন্দিরে প্রার্থনা করলে তা পূর্ণ হয় ৷
পূর্ণিয়া জেলার মুখ্যলয় থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে কসবায় অবস্থিত এই মন্দির ৷ এই মন্দিরে ঢোকার নিয়মই হয় হামাগুড়ি দিয়ে ৷ কারণ, এই মন্দিরে গর্ভগৃহের রাস্তা অনেকটাই সরু ও উচ্চতায় নিচু ৷ গুহ-র ভিতরে নীচের দিকেই রয়েছে মাতা বৈষ্ণদেবীর পিন্ড ৷ আর এই পিন্ডের আরাধনা চলে গোটা বছর ধরে ৷ ভক্তদের বিশ্বাস এই মন্দিরে মায়ের কাছে যা প্রার্থনা করা যায় তাই পূর্ণ হয় ৷ আর এই আশা ভক্তদের মনে জেগে ওঠে সদা জ্বলতে থাকা মায়ের সামনের প্রদীপ ৷ এই মন্দিরে একদিকে যেমন থাকেন মাতা বৈষ্ণদেবী, সঙ্গে থাকেন তার বোনেরাও ৷
পূর্ণিয়ার এই গুপ্ত কালী মন্দিরে বহু দূর দূর থেকে ভক্তদের সমাগম ঘটে৷ অনেকেই মনে করেন, মায়ের কাছে প্রার্থনা করলে, তার সুফল মিলবেই ৷ স্থানীয় বাসিন্দাদের বিশ্বাস এই মন্দিরে অবস্থিত মাতা বৈষ্ণেদবী, তাঁদের সব সময় রক্ষা করে ৷ জানা যায়, শুধু দুর্গাপুজোর সময় নয় ৷ এই মন্দিরে বছরে চার বার দুর্গাপুজো অনুষ্ঠিত হয় ৷ মানুষের বিশ্বাস এই মন্দিরে মাতা বৈষ্ণদেবী জাগ্রত হয়ে ভক্তদের আর্শিবাদ করেন ৷ দুর্গাপুজোর সঙ্গে পাল্লায় অযোধ্যায় পিছিয়ে পড়ছে রামলীলা। কবছর আগেও অযোধ্যার অলিতে গলিতে হত রামলীলা। এখন হাতে গোনা দু-এক জায়গায়। প্রবীণরা বলছেন, দুর্গাপুজোর বাড়বাড়ন্ত পিছনে ফেলে দিয়েছে রামলীলাকে।
১৯৯০-১৯৯১ সাল পর্যন্ত ছিল রামলীলার স্বর্ণযুগ। তারপরই এল দুর্গাপুজোর জোয়ার। জানাচ্ছিলেন অনিরুদ্ধ নারায়ণ জয়সওয়াল। রামলীলায় হনুমান সাজতেন তিনি। ১৯৯১ সালে তাঁর দল ভেঙে গিয়েছে। স্থানীয় থিয়েটার গ্রুপের মালিক রামচন্দ্র তেওয়ারি মনে করেন, রাম জন্মভূমি আন্দোলন যত গতি পেয়েছে, ততই বেড়েছে দুর্গাপুজো। কারণটা নিছকই অর্থনৈতিক। প্রথাগত রামলীলার থেকে দুর্গাপুজো সংগঠকদের হাতে বেশি টাকা এনে দেয়।
মঞ্চ বাঁধা থেকে শুরু করে রামলীলার শিল্পীদের মাইনের পিছনে বিস্তর খরচ। মাস কয়েক ধরে চলে রিহার্সাল। তার সঙ্গে আছে তাদের পোষাকের খরচ। তারও পরে রাবণের মূর্তি তৈরির খরচ, যা দশেরায় পোড়ানো হয়। সবমিলিয়ে দেড়লাখের কমে রামলীলা হয় না। কতার পাসাপাশি দুর্গাপুজোর প্যান্ডেলের খরচ বেশি নয়। সেখানে শিল্পীদের মাইনে দিতে হয় না, পোষাক কিনতে হয় না, রাবণের মূর্তি বানাতে হয় না। রামলীলার সংগঠকরা যেখানে খরচের টাকা তুলতে জেরবার হয়ে যান, সেখানে দুর্গাপুজোয় উদ্যোক্তাদের হাতে টাকা বেঁচে যায়।
রামলীলার এই পিছু হটায় ক্ষুন্ন শহরের প্রবীণরা। এতদিনের একটা ঐতিহ্য শেষ হয়ে যাচ্ছে। রামলীলায় যাঁরা রাবণ, কুম্ভকর্ণ আর মেঘনাদের মূর্তি বানাতেন তাঁরা কাজ হারাচ্ছেন। শতাব্দী ধরে তাঁরা এই কাজ করতেন। এখন অন্য কারবারে সরে গিয়েছেন তাঁরা। সূরযকুণ্ডের মন্দিরের মোহন্ত যুগলকিশোর শরণ শাস্ত্রীর আশা, আরও বড় করে আকর্ষণীয়ভাবে উপস্থাপন করলে রামলীলার হারানো গৌরব ফিরে আসবে। রামলীলা দেখতে আবার ভিড় জমাবেন মানুষ।
কেন্দ্রীয় দুর্গাপূজা ও রামলীলা কমিটির পক্ষে জানানো হয়েছে, শহরের পাঁচ কিলোমিটার বৃত্তের মধ্যে দুর্গাপুজো হয় কম করেও ৫০ টা। সেখানে রামলীলা হয় মাত্র দুটো জায়গায়, রাজেন্দ্রনিবাস আর ভগবতাচার্য সদনে।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের তথ্য অনুযায়ী, এবছর সারাদেশে ৩১ হাজার ২৭২টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আর রাজধানী ঢাকাতে এবার পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে ২৩৪টি মণ্ডপে। দুর্গাপূজা উপলক্ষে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশের প্রতিটি পূজামণ্ডপের নিরাপত্তা রক্ষায় পুলিশ, আনসার, বিজিবি, র্যাবসহ অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন। প্রতিটি মণ্ডপে রয়েছে স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীও।
ঢাকা মহানগর সার্বজনীন পূজা উদযাপন কমিটি জানিয়েছে, ঢাকেশ্বরী মন্দির মেলাঙ্গণে পূজা কমিটির উদ্যোগে কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে। ঢাকেশ্বরী মণ্ডপে পূজার পাশাপাশি ভক্তিমূলক সঙ্গীতানুষ্ঠান, বস্ত্র বিতরণ, মহাপ্রসাদ বিতরণ, আরতি প্রতিযোগিতা, স্বেচ্ছা রক্তদান ও বিজয়া শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হবে।
এছাড়া ঢাকায় রামকৃষ্ণ মিশন ও মঠ পূজামণ্ডপ, গুলশান-বনানী সার্বজনীন পূজা পরিষদ মণ্ডপ, রমনা কালীমন্দির ও আনন্দময়ী আশ্রম, বরোদেশ্বরী কালীমাতা মন্দির ও শ্মশান, সিদ্ধেশ্বরী কালিমাতা মন্দির, ভোলানাথ মন্দির আশ্রম, জগন্নাথ হল, ঋষিপাড়া গৌতম মন্দির, বাসাবো বালুর মাঠ, শাঁখারীবাজারের পানিটোলা মন্দিরসহ অন্যান্য মণ্ডপে দুর্গোত্সবের ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এ বছর সবচেয়ে বেশি পূজামণ্ডপ তৈরি করা হয়েছে সূত্রাপুর থানায়। তবে অন্য বছরের মতো এবারো এলাকাভিত্তিক মণ্ডপ তৈরিতে এগিয়ে আছে শাঁখারিবাজার ও তাঁতীবাজার। এদিকে পূজা উপলক্ষে কেনাকাটার ধুম পড়েছে।
পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার মতো বাংলাদেশেও এবার থিম বা নির্দিষ্ট বিষয়ভিত্তিক মণ্ডপ ও প্রতিমা নির্মাণের প্রবণতা বেড়েছে। নিত্যনতুন থিম ও প্রতিমায় অভিনবত্বের পাশাপাশি থাকছে ঐতিহ্যের ভিন্নতা। কোনো কোনো মণ্ডপে প্রাচীন রোমান দেব-দেবী ধাঁচে প্রতিমা বানানো হয়েছে। পদ্মফুলের ওপর প্রতিমা, গহীন অরণ্যে দুর্গা, মহাপ্রলয়ের মাঝখানে, বরফের পাহাড়ে শ্বেত শুভ্র বসনে, বৃক্ষের মধ্যে, এমনকি মহাকাশের আবহে রোবটিক চেহারায় গড়া হয়েছে দুর্গাকে।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*