গল্প স্বল্প- “মেরী ক্রিসমাস”

পিয়ালি

আজ বড়দিন। চারদিক আলো ঝলমল। পার্কস্ট্রীট জমজমাট। কিন্তু সুমার মুখ ভার। রীতেশ বুঝিয়েও পারছেনা। আজকে তার পক্ষে আনন্দ করা সম্ভব নয়। তখন খুব ছোট রীতেশ। মা বাবার সঙ্গে ব্যান্ডেল চার্চ গিয়েছিল। খুব মজায় কেটেছিল সারাদিন। সেদিন বাবার ছিলো নাইট ডিউটি। ট্র‍্যাফিক সার্জেন্ট সুমঙ্গল বসুর নাইট ডিউটি পড়েছিলো পার্কস্ট্রীট-এ। সালটা ২০০৩। রাত তখন বারোটা। গমগম করছে পার্কস্টীট। হঠাৎই এক মহিলার চিৎকার। টেনে গাড়িতে তোলা হচ্ছে তাকে। ধাওয়া করেন সুমঙ্গল।মহিলার স্বামীও কোলে বাচ্চা নিয়ে হেল্প হেল্প চিৎকার করেন। একটু মফস্বল শহরের বাসিন্দা।

রীতেশের বাবা ধাওয়া করে ধরে ফেলেন দুষ্কৃতিদের গাড়িটিকে। শুরু হয় ধস্তাধস্তি। রিভলবার তাক করে সুমঙ্গলের দিকে। ঝটিকায় মহিলা সরিয়ে দেন সুমঙ্গলকে। গুলি লাগে মহিলার বুকে। পালিয়ে যায় দুষ্কৃতিরা। পরে ধরা পড়ে, শাস্তিও হয়। কিন্তু মাতৃহারা হয় শিশু অনির্বাণ। তারপর থেকে অনির্বাণ মানুষ রীতেশদের বাড়িতেই। যেন দুই ভাই। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে রীতেশের মাও।

কিন্তু সুমা এত আবেগকে পাত্তা দেয় না। দাম্পত্য কলহে এগিয়ে আসে অনির্বাণ। বলে মা বলতেন শেষ বলে কিছু হয়না। আত্মার মৃত্যু নেই। হাসিমুখে মা দেখবেন তাঁর পরবর্তী প্রজন্ম নিরাপদে, আনন্দে পালন করছে প্রভু যীশুর জন্মদিন। তাই মেরী ক্রিসমাস।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*