মেডিক্যাল পড়া অসমাপ্ত রেখে ইউক্রেন ফেরত বাংলার পড়ুয়াদের ভবিষ্যৎ কী? সংসদে প্রশ্ন তুলবে TMC

ইউক্রেন ফেরত ভারতীয় ছাত্রদের নিয়ে উদ্বিগ্ন তৃণমূল। সংসদে এই ইস্যুতে সরব হবে দল। তৃণমূলের বক্তব্য, যুদ্ধবিদ্ধস্ত ইউক্রেন থেকে ফিরে আসা ডাক্তার ও ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়াদের ভবিষ্যৎ যেন নষ্ট না হয় সেই উদ্যোগ নিতে হবে কেন্দ্রকেই।

এক বা দু’হাজার নয়। অন্তত আঠারো হাজার ভারতীয় পড়ুয়া ইউক্রেনের বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজে ডাক্তারি পড়ছেন। কিন্তু ঘটনা হল সময় যত গড়াচ্ছে ততই প্রাণ হাতে করে ইউক্রেন থেকে ফিরে আসছেন ভারতীয় পড়ুয়ারা। ঠিক এই সময়ে রাজ্যের চিকিৎসকদের একটা বড় অংশের প্রশ্ন, দেশে ফিরে এলেও তাঁরা কি ফের ইউক্রেনে ফিরে যেতে পারবেন? আবার কি ডাক্তারি পড়তে পারবেন? একই প্রশ্ন অভিভাবকদেরও। এককথায় উত্তর না। তেমন সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। তাহলে কি স্বদেশেই লেখাপড়া করার সুযোগ পাবেন। ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশনের নিয়ম বলছে তেমন সুযোগ নেই। আর এই ইস্যুতে সংসদে সরব হবেন তৃণমূল সাংসদের একটা বড় অংশ।

সাংসদ ডা. শান্তনু সেনের কথায়, “মানুষের জন্য আইন। তাই যুদ্ধের জন্য যে সব ছেলেমেয়ে লেখাপড়া না করেই ফিরে আসতে বাধ্য হচ্ছে। তাঁরা যাতে বাকি লেখাপড়া সম্পূর্ণ করতে পারে তার জন্য অবশ্যই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে কেন্দ্রকে। রাজ্যসভায় বিষয়টি তুলব।” আইএমএ-র রাজ্য শাখা সম্পাদক শান্তনু সেনের কথায়, “একজন চিকিৎসক ও নাগরিক হিসাবে আমিও উদ্বিগ্ন ওঁদের জন্য। তাই আইনের অজুহাত দেখিয়ে এড়িয়ে যাওয়ার কোনও সুযোগ নেই কেন্দ্রের।” এখন দেখা যাক ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশন বিদেশ ফেরত ডাক্তারদের স্বীকৃতি সম্পর্কে কী বলছে? এনএমসি-র নিয়ম অনুযায়ী বিদেশ থেকে ডাক্তারি পাস করে ফেরার পর দেশে যোগ্যতা নির্ণায়ক পরীক্ষায় বসতে হয়। তার পরই ডাক্তার হিসাবে স্বীকৃতি মেলে।

কিন্তু ইউক্রেনের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ থেকে যাঁরা কোর্স অসমাপ্ত করেই ফিরে আসছেন তাঁরা যে দেশের কোনও মেডিক্যাল কলেজে ফেরে লেখাপড়া করার সুযোগ পাবেন তার কোনও সুযোগ নেই। আর ইউক্রেনে কবে ফেরত যেতে পারবেন তাও অনিশ্চিত। দেশে ফিরে যাতে লেখাপড়া করার সুযোগ পায় তার জন্য সংসদে কেন্দ্রের কাছে উত্তর চাইবেন তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন ও অন্য সাংসদরা। এদিনই রাত সাড়ে দশটায় পোল্যান্ড থেকে রাজ্যে ফিরছেন অন্তত দু’শো জন ভারতীয় ডাক্তারি পড়ুয়া। এঁদের মধ্যে রয়েছেন কিয়েভের এলভিভ ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের ছাত্রী উত্তর ২৪ পরগনার বাসিন্দা তিয়াশা বিশ্বাস। জেলাশাসক সুমিত গুপ্তা তিয়াশার বাবা ডা. শ্যামল বিশ্বাসকে খবর জানিয়েছেন। শ্যামলবাবুর কথায়, “মেয়ে আগে বাড়ি ফিরুক। বড্ড চিন্তায়..।” গলা বুজে আসছিল বসিরহাটের মেডিক্যাল অফিসারের।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*