আজকের দিন

অনিল রাধাকৃষ্ণ কুম্বলে

জন্মদিন : ১৭ অক্টোবর, ১৯৭০ স্থান- বেঙ্গালুরু, কর্ণাটক

তিনি একজন ভারতীয় ক্রিকেটার যিনি একদিনের এবং টেস্ট উভয় ক্রিকেটেই ভারতের সর্বোচ্চ উইকেট পেয়েছেন। কুম্বলে হোলি সেইন্ট ইংলিশ স্কুলে প্রাথমিক পড়াশোনা শুরু করেন। ১৩ বছর বয়সে ‘ইয়ং ক্রিকেটারস’ নামের ব্যাঙ্গালোরের এক ক্লাবে তিনি তাঁর খেলাধুলা শুরু করেন। এবং পরে তিনি মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করেন। তাঁর ডাকনাম হলো জাম্বু। ১৯৯০ সালে তিনি কর্ণাটকের হয়ে প্রথম খেলেন তারপরই অষ্ট্রেল-এশিয়া কাপের জন্য তাঁকে সিলেক্ট করা হয়। টেস্ট ও একদিনের সিরিজে অনেক রেকর্ড তিনি গড়েছেন।  ১৯৯৫ সালে ভারত সরকার তাঁকে অর্জুন অ্যাওয়ার্ডে করে। এছাড়াও পদ্মশ্রী,  অন্যান্য সম্মানে তাঁকে ভূষিত করা হয়। তিনি আই পিএলএ রাজস্থান রয়েলে খেলেছেন। জন্মদিনে রোজদিন-এর পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা।

স্মিতা পাতিল

জন্মদিন : ১৭ অক্টোবর, ১৯৫৫ স্থান- মহারাষ্ট্রে

স্মিতা পাতিল একজন বিখ্যাত ভারতীয় চলচ্চিত্র অভিনেত্রী, টেলিভিশন ও থিয়েটার কর্মী ছিলেন। তিনি তাঁর সময়কালে শ্রেষ্ঠ মঞ্চ ও চলচ্চিত্র অভিনেত্রীরূপে আখ্যায়িত হয়ে থাকেন। এক দশকেরও অধিক সময় অভিনয়কর্মে মনোনিবেশ ঘটান। এসময়ে হিন্দি ও মারাঠি ভাষার ৮০-এর অধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি।

শ্যাম বেনেগালের চরণদাস চোর চলচ্চিত্রের মাধ্যমে তাঁর অভিষেক ঘটে। ভারতীয় চলচ্চিত্র অঙ্গনে শীর্ষস্থানীয় অভিনেত্রী রূপেও বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্রে তাঁর ভূমিকা ছিল। তাঁর উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রের মধ্যে রয়েছে— মন্থন, ভূমিকা, আক্রোশ, চক্র, চিদাম্বরম ও মির্চ মশলা। একই প্রজন্মের অভিনেত্রী রূপে পরিচিত শাবানা আজমির সাথে তিনিও রাজনৈতিকধর্মী চলচ্চিত্রে অংশ নেন। এ ছাড়াও শ্যাম বেনেগাল, গোবিন্দ নিহালানি, সত্যজিৎ রায়, জি অরিন্দম এবং মৃণাল সেনের ন্যায় প্রখ্যাত পরিচালকদের সাথে কাজ করার পাশাপাশি মুম্বাইয়ের বাণিজ্যিকধর্মী হিন্দি চলচ্চিত্রেও তাঁর পদচারণা ছিল। চলচ্চিত্র জীবনে অসামান্য অবদান রাখায় ১৯৮৫ সালে ভারত সরকার প্রদত্ত চতুর্থ সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা পদ্মশ্রী পদকে ভূষিত হন। ১৯৮৭ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত মির্চ মশলায় তাঁর ভূমিকা ছিল অনবদ্য ও প্রশংসনীয়। ভারতীয় চলচ্চিত্রের শতবার্ষিকী উদ্‌যাপন উপলক্ষে এপ্রিল ২০১৩ সালে ফোর্বস সাময়িকি চলচ্চিত্রটিকে অভিনয়শৈলীর দিক দিয়ে ২৫তম অবস্থানে রাখে। ২০১১ সালে রেডিফ ডট কম নার্গিসের পর স্মিতাকে সর্বকালের দ্বিতীয় সেরা অভিনেত্রীরূপে তালিকাভুক্ত করে। ২০১২ সালে তাঁর সম্মানে স্মিতা পাতিল ডকুমেন্টারি ও শর্টফিল্ম উৎসবের আয়োজন করে। ভারতীয় চলচ্চিত্রের শতবার্ষিকীতে ডাকবিভাগ তাঁর মুখাবয়ব নিয়ে ৩ মে, ২০১৩ তারিখে ডাকটিকিট প্রকাশ করে। জন্মদিনে রোজদিন-এর পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা।

স্যার সৈয়দ আহমদ খান বাহাদুর

জন্মদিন : ১৭ অক্টোবর ১৮১৭

তাঁর জন্মনাম সৈয়দ আহমেদ তাকভি। সাধারণত স্যার সৈয়দ নামে সমধিক পরিচিত, ভারতের একজন বিখ্যাত শিক্ষাবিদ ও রাজনীতিবিদ যিনি ভারতের মুসলিমদের আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত করে তোলার ক্ষেত্রে অগ্রদূতের ভূমিকা পালন করেন। তিনি এই কাজের জন্যই মোহামেডান অ্যাংলো-ওরিয়েন্টাল কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন যা পরবর্তীতে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় নামে পরিচিতি লাভ করে। তার চিন্তাধারা ও কাজকর্ম সেখানকার মুসলিমদের মধ্যে একটি নতুন চেতনার জন্ম দেয়, তার প্রভাবে প্রভাবান্বিত এই মুসলিম বুদ্ধিজীবীরাই পরবর্তীতে আলিগড় আন্দোলনের সূচনা করেন। জন্মদিনে রোজদিন-এর পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা।

বৃন্দা কারাত

জন্মদিন : ১৭ অক্টোবর ১৯৪৭

বৃন্দা কারাত ভারতের একজন বিশিষ্ট কমিউনিস্ট রাজনীতিবিদ। ইনি ২০০৫ সালের ১১ এপ্রিল পশ্চিমবঙ্গ থেকে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী)-র হয়ে রাজ্যসভার সদস্য নির্বাচিত হন। তাঁর বাবা ছিলেন স্বরজলাল দাস। মাত্র ৫ বছর বয়সে তাঁর মা অশ্রুকনা মিত্র মারা যান। তিনি ওয়েলহাম গার্লস হাই স্কুল (দেরাদুন), মিরান্দা হাউস (দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়) এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশুনা করেন। সিপিআইএম নেতা প্রকাশ কারাতের সাথে তাঁর বিবাহ হয়। জন্মদিনে রোজদিন-এর পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা।

লালন ফকির

মৃত্যুদিন : ১৭ অক্টোবর ১৮৯০

লালন ১৭৭৪ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী একজন বাঙালি; যিনি ফকির লালন, লালন সাঁই, লালন শাহ, মহাত্মা লালন ইত্যাদি নামেও পরিচিত। তিনি একাধারে একজন আধ্যাত্মিক বাউল সাধক, মানবতাবাদী, সমাজ সংস্কারক এবং দার্শনিক। তিনি অসংখ্য গানের গীতিকার, সুরকার ও গায়ক ছিলেন। লালনকে বাউল গানের অগ্রদূতদের অন্যতম একজন হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তার গানের মাধ্যমেই উনিশ শতকে বাউল গান বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করে। তাকে ‘বাউল সম্রাট’ হিসেবেও আখ্যায়িত করা হয়ে থাকে।

লালন ছিলেন একজন মানবতাবাদী। যিনি ধর্ম, বর্ণ, গোত্র-সহ সকল প্রকার জাতিগত বিভেদ থেকে সরে এসে মানবতাকে সর্বোচ্চ স্থান দিয়েছিলেন। অসাম্প্রদায়িক এই মনোভাব থেকেই তিনি তার গান রচনা করেছেন। তার গান ও দর্শন যুগে যুগে প্রভাবিত করেছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর,  কাজী নজরুল ও অ্যালেন গিন্সবার্গের মতো বহু খ্যাতনামা কবি, সাহিত্যিক, দার্শনিক, বুদ্ধিজীবী-সহ অসংখ্য মানুষকে। তার গানগুলো মূলত বাউল গান হলেও বাউল সম্প্রদায় ছাড়াও যুগে যুগে বহু সংগীতশিল্পীর কণ্ঠে লালনের এই গানসমূহ উচ্চারিত হয়েছে। গান্ধীরও ২৫ বছর আগে, ভারত উপমহাদেশে সর্বপ্রথম, তাকে ‘মহাত্মা’ উপাধি দেওয়া হয়েছিল।

লালনের কয়েকটি উল্লেখযোগ্য গান— আমি অপার হয়ে বসে আছি, সব লোকে কয় লালন কি জাত সংসারে, জাত গেলো জাত গেলো বলে, খাঁচার ভিতর অচিন পাখি কেমনে আসে যায়, আপন ঘরের খবর লে না, আমারে কি রাখবেন গুরু চরণদাসী, মন তুই করলি একি ইতরপনা, এই মানুষে সেই মানুষ আছে, যেখানে সাঁইর বারামখানা, বাড়ির কাছে আরশিনগর, আমার আপন খবর আপনার হয় না, দেখ না মন, ঝকমারি এই দুনিয়াদারী, ধর চোর হাওয়ার ঘরে ফান্দ পেতে, সব সৃষ্টি করলো যে জন, সময় গেলে সাধন হবে না, আছে আদি মক্কা এই মানব দেহে, তিন পাগলে হলো মেলা নদে এসে, মিলন হবে কত দিনে ইত্যাদি। ১৮৯০ সালে এই দিনে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। জন্মদিনে রোজদিন-এর পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা।

তথ্য সংগ্রহ : মাসানুর রহমান

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*