অন্য সকাল

অর্ণব গরাই:

আজ সকাল থেকে সুব্রত উসখুস করতে থাকে, একবার হাত ঘড়ি একবার দেওয়াল ঘড়ি দেখছে । রান্নাঘর থেকে যাতায়াতের পথে ইন্দ্রানী অনেকবার লক্ষ্য করেছে সুব্রতর চঞ্চলতা, জানে জিজ্ঞেস করে লাভ নেই । বিয়ে হওয়ার পর থেকে চারবছর এই এক জিনিষ দেখে আসছে, আজকের দিনে সুব্রত যেন একটা অন্য মানুষ হয়ে পড়ে । তাই এবারে সে ঠিক করেছে না প্রশ্ন নয় অনুসরন করতে হবে সুব্রতকে ।

নটা বাজলো, পাজ্ঞাবী আর জিন্স পরে বাইক নিয়ে বেড়িয়ে পড়ল সুব্রত । ইন্দ্রানীও তার স্কুটি নিয়ে চললো সুব্রতের পেছনে । বাইক এসে একটা বহু পুরানো তিনতলা বাড়ীর সামনে দাঁড়ালো, প্রচুর লোক আর মহিলা সেই জায়গায় । ইন্দ্রানী স্কুটিটা পার্কিং করে সুব্রতকে অনুসরন করতে লাগলো, দুতলা ঘরে ততক্ষনে সুব্রত ঢুকে পড়েছে আর ইন্দ্রানীও ততক্ষনে বুঝেছে এটা নিষিদ্ধপল্লী । ঘেন্না করছে সুব্রতর উপর, গা গুলিয়ে আসছে একটা উৎকট গন্ধে, যাবে কি যাবেনা ভেবে এক পা দুপা করে বন্ধ দরজার সামনে ইন্দ্রানী । ওপার থেকে তখন কতগুলি মহিলার হাসির উল্লাস, বেশ বুঝতে পারছে সে সুব্রত এখানের নিয়মিত একজন, কোন রকমে দরজা ঠেলে ঢুকে পড়ে ইন্দ্রানী । সুব্রত কি যেন একটা একজন মহিলাকে প্যাকেট করে দিচ্ছে, সুব্রত বলে চিৎকার করে ওঠে ইন্দ্রানী । সুব্রত মৃদু কন্ঠে বলে এসো ইন্দ্রানী, আমি জানি তুমি আমাকে ধাওয়া করেছো । আলাপ করিয়ে দিই এরা সকলেই আমার দিদি,তুমি জানো আমি অনাথ এবং আমার কোন নিজের দিদি নেই তেমনিই এদেরও কোন ভাই নেই তাই আজকের দিনে আমরা একে অপরের দু:খ ভুলে এইদিনটাকে পালন করি । ইন্দ্রানী সব ভুলে তখনও বিমুঢ়, আসার আগে কথা দিয়েছে আগামী বছর থেকে সেও আসবে সুব্রতর সাথে তার ভাইদের ফোঁটা দিতে ।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*