অনুগল্পঃ জয়ী

পায়েল খাঁড়াঃ

স্কুলবাড়িটাকে ব্যারিকেড করে ঘিরে আছে ছোট বড় পড়ুয়ার দল।তারা শক্ত করে পরস্পরের হাত ধরে আছে। ঠিক যেন অভেদ্য লক্ষ্মনরেখা।
স্কুলের দশ গজের মধ্যে এসেই থমকে গেল গ্রামের লোক।লাঠিসোটা নিয়ে তারা এসেছে স্কুল ভাঙতে। শহরের স্কুলগুলোয় আজকাল যা নোংরামো হচ্ছে—সবই তো টিভিতে দেখাচ্ছে। না না ওসব স্কুল-পাঠশালায় লেখপড়া চাই না তাদের। ছেলেমেয়েরা মুর্খ হয়ে থাক তাই ভালো।শেষে কি শিক্ষার দায়ে সম্মান খোয়াবে!

“এই ছেলেমেয়েরা সরে যা বলছি সামনে থেকে” হুঙ্কার দিয়ে উঠল মোড়ল।
প্রত্যুত্তর এল দৃঢ়কন্ঠে—“ এই স্কুল আমাদের মন্দির__প্রান থাকতে আমরা একে ভাঙতে দেব না।”
গ্রামে-গঞ্জে পুলিশি ব্যবস্থা খুব একটা সুচারু হয় না।ঝামেলার খবর পেয়ে পুলিশ অকুস্থলে এলেও এক গ্রাম লোককে ঠেকানো তাদের সামর্থে কুলাবে না জেনেই নিরব দর্শক হয়েই দাঁড়িয়ে রইল তারা।কিন্তু পুলিশি সাহায্যের ভরসায় তো আর ছাত্রছাত্রীরা রুখে দাঁড়ায়নি।আত্মবিশ্বাসের জোরেই তাদের এই প্রতিরোধ।
অস্তগামী সূর্যের আভায় রেঙে উঠেছে পশ্চিম দিগন্ত।অনেক চেষ্টা চরিত্র বচসার শেষে ছোট ছোট পড়ুয়াদের জেদ আর একতার কাছে নতি স্বীকার করল গ্রামবাসীর ভ্রান্ত মানসিকতা।
দূরে কোথাও সান্ধ্য শাঁখ বেজে উঠল__অতঃপর খুদে সৈনিকদের যুদ্ধজয়ী বিউগল।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*