ঝাড়খণ্ডে সরকার ফেলার চক্রান্ত! তদন্তের দাবি তৃণমূলের

ঝাড়খণ্ডের কংগ্রেস বিধায়কদের গাড়ি থেকে টাকা উদ্ধারের ঘটনায় উপযুক্ত তদন্ত দাবি করল তৃণমূল। দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, কয়েক দিন আগে একটি ঘটনার পর রাজ্য কংগ্রেসের নেতারা নোট বিশেষজ্ঞ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছিলেন। ঝাড়খণ্ডের ৩ কংগ্রেস বিধায়কের গাড়ি থেকে টাকা উদ্ধারের ঘটনায় তাঁরা চুপ কেন? বাংলার কংগ্রেস নেতাদের এই বিষয়ে মুখ খোলা উচিত।

কংগ্রেস বিধায়কদের গাড়ি থেকে টাকা উদ্ধারের পিছনে বিজেপির অপারেশন লোটাসের ছায়া দেখতে পেয়েছেন জয়রাম রমেশ৷ টুইটে তিনি লেখেন, দিল্লির হাম দো-র গেমপ্ল্যান হল মহারাষ্ট্রে যে ভাবে ই-ডি জুটিকে বসিয়েছেন, সেই একই কাজ ঝাড়খণ্ডে করা৷ তৃণমূলও একই অভিযোগ করেছে। কুণালের প্রশ্ন, ঝাড়খণ্ডে সরকার ফেলার চক্রান্ত নয় তো? কারা টাকা দিয়েছেন তাঁদের? এই বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হওয়া উচিত।

সম্প্রতি রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ঝাড়খণ্ডে সরকার ফেলার কথা বলেন। সেই প্রসঙ্গও এদিন টেনেছেন কুণাল। তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদকের কথায়, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ঝাড়খণ্ডে সরকার ফেলার কথা বলেছিলেন। সেই কারণে এই মামলায় শুভেন্দুকেও যোগ করা উচিত। সরকার দখল, সরকার ফেলার চক্রান্তে উনি জড়িত কি না, সেটাও তদন্ত করে দেখা উচিত।

শনিবার হাওড়া সাঁকরাইলের পাঁচলা থানা এলাকায় গাড়ির ভিতর বান্ডিল বান্ডিল টাকা উদ্ধার হয়। প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা বাজেয়াপ্ত করে পুলিস। গাড়িতে ছিলেন ঝাড়খণ্ডের তিন কংগ্রেস বিধায়ক৷ গতকাল রাতভর জিজ্ঞাসাবাদের পর আজ, রবিবার তাঁদের গ্রেফতার করে পুলিস৷ গ্রেফতারের পরই তিনজনকে তুলে দেওয়া হয় সিআইডির হাতে।

ধৃতরা হলেন ঝাড়খণ্ডের জামতাড়ার বিধায়ক ইরফান আনসারি, খিরজির বিধায়ক রাজেশ কাছাপ এবং কোলেবিরার বিধায়ক নমন বিক্সাল৷ এঁদের সঙ্গে আরও দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়৷ এদিনই সবাইকে তোলা হবে আদালতে৷ পুলিস জানিয়েছে, বিধায়কদের গাড়ি থেকে প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা উদ্ধার হয়েছে৷ এই টাকা কোথা থেকে পেলেন তার সন্তোষজনক ব্যাখ্যা কেউই দিতে পারেননি৷

জিজ্ঞাসাবাদে পুলিস জানতে পেরেছে, ওই তিন বিধায়ক শুক্রবার গুয়াহাটি গিয়েছিলেন৷ পরেরদিনই কলকাতায় ফিরে আসেন৷ একরাতের জন্য কেন তারা অসম গিয়েছিলেন সেই প্রশ্নের কোনও জবাব এড়িয়ে গিয়েছেন৷ কংগ্রেস প্রথম থেকেই দাবি তুলেছে, ঝাড়খণ্ডে জেজেএম-কংগ্রেসের জোট সরকার ফেলতে তৎপর হয়ে উঠেছে বিজেপি৷

তার পর বিধায়কদের গুয়াহাটিতে যাওয়ার খবরে সেই দাবি আরও জোরালো হয়ে উঠেছে৷ যদিও পুলিসের কাছে ওই তিন বিধায়ক প্রথমে জানিয়েছিল, তাঁদের গন্তব্য ছিল মন্দারমণি৷ ফেরার সময় কলকাতার বড়বাজার থেকে শাড়ি কেনার কথা ছিল৷ আগামী ৯ অগস্ট আদিবাসী দিবস উপলক্ষে ঝাড়খণ্ডে নিজের নিজের এলাকায় ওই শাড়ি বিতরণ করার কথা ছিল ৷ শাড়ি কিনতেই তাঁদের আসা ৷

এদিকে গতকালের ঘটনার পরই দলনেত্রী সোনিয়া গান্ধীর নির্দেশে ওই তিন বিধায়ককে অবিলম্বে সাসপেন্ড করে কংগ্রেস৷ রবিবার সাংবাদিক সম্মেলন করে শাস্তির কথা ঘোষণা করেন ঝাড়খণ্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত কংগ্রেস নেতা অবনীশ পাণ্ডে৷ তিনি বলেন, ‘আমরা সবার খবর রাখি৷ আগামিদিনে যিনি এই ধরনের ঘটনার সঙ্গে যুক্ত থাকবেন, তিনি জনপ্রতিনিধি হোক বা দলের কোনও সাধারণ কর্মী, তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷’

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*