ভারতরত্ন পেলেন প্রণব, ভূপেন,নানাজি

প্রণব মুখোপাধ্যায় ভারতরত্ন। দেশের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি। মিরাটির পল্টু থেকে দেশের রাষ্ট্রপতি।প্রথম এবং একমাত্র বাঙালি রাষ্ট্রপতি।রাজ্যসভার সাংসদ থেকে অর্থমন্ত্রী, প্রতিরক্ষামন্ত্রী, বিদেশমন্ত্রী,বিরোধী দলনেতা,লোকসভায় শাসক দলের নেতা। প্ল্যানিং কমিশনের ডেপুটি চেয়ারম্যান, সংসদে বহু কমিটি র চেয়ারম্যান, মন্ত্রীগোষ্ঠীর শীর্ষে গুরুদায়িত্ব পালন করেছেন প্রণব বাবু। কংগ্রেস দলের ক্রাইসিস ম্যানেজার এহেন ব্যক্তি দলের কাছে সম্পদ। কংগ্রেস রাজনীতির চাণক্য প্রণব মুখার্জির আফসোস ছিলো বড়বড় পদে থাকলেও জনগণের ভোটে জেতা হলো না। তিনি মাস লিডার নন, এই ধারণা কে ভুল প্রমাণ করে ২০০৪ সালে জঙ্গিপুর থেকে জিতে এলেন। পি.এম(প্রণব মুখার্জি) এর ইচ্ছে ছিলো পি.এম(প্রধানমন্ত্রী/প্রাইম মিনিস্টার ) হওয়ার, এমনই রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য। হননি। কিন্তু সোনিয়া গান্ধী তাঁর ইচ্ছা কে সুদে আসলে পুষিয়ে ভারতের রাষ্ট্রপতি হওয়ার সুযোগ দেন তাঁকে। লোকসভা নির্বাচন দোরগোড়ায়। তার আগে একজন আপাদমস্তক কংগ্রেসী মানুষকে ভারত রত্ন দেওয়ার পেছনে মোদী’ র গেমপ্ল্যান অবশ্যই কাজ করছে।অনেকের মতে গতবছর নাগপুরে আরএসএস এর সভায় গিয়েছিলেন প্রণববাবু। এটা তারই পুরস্কার। তবে ব্যাপারটা শুধু কি তাই? মোদী তাঁর টুইট বার্তায় “প্রণব দা” সম্বোধন করে তাঁকে “outstanding statesman ” (অনবদ্য রাষ্ট্রনায়ক) বলেছেন। পাশাপাশি নরেন্দ্র মোদী বিরোধী মহাজোট কে চোখে আঙুল দিয়ে বোঝাতে চেয়েছেন তাঁর রাজনৈতিক উদারতা। মানুষের কাছে বার্তা পৌঁছাতে চেয়েছেন তিনি গুণীর কদর করতে জানেন। প্রসঙ্গত ভারতরত্ন রাষ্ট্রপতি দিলেও তার সুপারিশ করেন প্রধানমন্ত্রী।

২০১৯ এ সর্বোচ্চ নাগরিক(অসামরিক) সম্মান ভারতরত্ন দেওয়া হলো প্রণব মুখার্জি, ভূপেন হাজারিকা, নানাজি দেশমুখ কে। এই নাম চয়নেই আছে ভোটের অংক। প্রাপক তিনজনের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠেনা। রাহুল গান্ধী থেকে শুরু করে বিভিন্ন দলের নেতা ও বহু বিশিষ্ট ব্যক্তি অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রণব বাবুকে।

তা সত্বেও একটা কিন্তু,থেকেই যাচ্ছে। তা হলো লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গের দিকে পাখির চোখ করেছে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। সেক্ষেত্রে বাঙালি সেন্টিমেন্ট আকে ভোটবাক্সে প্রতিফলিত করার একটা সুপ্ত ইচ্ছা থেকেই যায়। একই ভাবে অসমে এনআরসি নিয়ে বিজেপি কিছুটা ব্যাকফুটে।উত্তর পূর্বের রাজ্যগুলিতে পদ্ম ফোটাতে মরিয়া মোদী -শাহ জুটি। তাই কি ক্যালকুলেশন করেই “মানুষ মানুষের জন্য” খ্যাত অসমিয়া সংগীত শিল্পী ভূপেন হাজারিকা কে দেওয়া হলো মরণোত্তর ভারতরত্ন? অবশ্য বিশিষ্ট শিল্পী ভূপেন বাবু বিজেপির টিকিটে প্রার্থীও হয়েছেন।

নানাজি দেশমুখকে মরণোত্তর ভারতরত্ন দিয়ে মোদী আরএসএসকে প্রণামি দিলেন। সমাজকর্মী নানাজি আরএসএস এর প্রতিনিধি। ভারতীয় জনসংঘ গঠনে তাঁর বিশেষ ভূমিকা ছিলো।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*