স্বামী বিবেকানন্দ

১৯০২ সালের ৪ জুলাই আজকের দিনেই মৃত্যু হয় স্বামী বিবেকানন্দের। তাঁর নশ্বর দেহ পঞ্চভূতে বিলীন হলেও চিরকালীন তাঁর অমর বাণী। বিবেকানন্দের মৃত্যু নিয়ে কোনও রহস্য সেই ভাবে না থাকলেও মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে কিছু ভিন্ন ধারণা রয়েছে।
১৮৬৩ সালের ১২ জানুয়ারি জন্ম হয় স্বামী বিবেকানন্দের। ভারতীয় দর্শনের বেদান্ত শাখা এবং যোগচর্চার মাহাত্ম্য তিনিই প্রথম পাশ্চাত্য দুনিয়ার সামনে তুলে ধরেন। উনিশ শতকের শেষের দিকে পৃথিবীর সামনে হিন্দুধর্মের গুরুত্ব মেলে ধরেন তিনি। বিভিন্ন ধর্মমতের মধ্যে পারস্পরিক সুসম্পর্ক স্থাপনের কৃতিত্বও তাঁকে দিয়ে থাকেন অনেকে। রামকৃষ্ণ মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশনের প্রতিষ্ঠা করেন স্বামী বিবেকানন্দ। পরাধীন ভারতে হিন্দুত্বের নবজাগরণ এবং জাতীয়তাবাদের প্রসার ঘটান তিনি। ১৮৯৩ খ্রিস্টাব্দে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো বিশ্ব ধর্ম সম্মেলনে তাঁর বিখ্যাত বক্তৃতা, যার শুরু ‘হে আমার আমেরিকার ভাই ও বোনেরা…’, তার মাধ্যমেই পাশ্চাত্য সমাজে প্রথম হিন্দুধর্মের মাহাত্ম প্রচার করেন তিনি।
বেলুড় মঠ
১৯০২ সালের ৪ জুলাই, তাঁর মহাপ্রয়াণের দিন স্বামীজি অত্যন্ত সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে পড়েছিলেন। বেলুড় মঠের প্রার্থনা গৃহে তিন ঘণ্টা ধ্যান করেন তিনি। এরপর ছাত্রদের শুক্লা-যজুর্বেদ, সংস্কৃত ব্যকরণ ও দর্শনশাস্ত্র শেখান। পরে স্বামী প্রেমানন্দের সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ পায়চারি করেন তিনি, আলোচনা করেন রামকৃষ্ণ মঠের ভবিষ্যত্‍ নিয়ে। সেদিন বেলুড়ঘাটে জেলের নৌকো ভিড়েছিল। নৌকো ভর্তি গঙ্গার ইলিশ মহোত্‍সাহে কিনিয়েছেন বিবেকানন্দ। সবার সঙ্গে বসে দুপুরে খেয়েছেন ইলিশের নানা পদ। সন্ধে ৭টা নাগাদ নিজের ঘরে চলে যান তিনি। বলে যান, এখন কেউ যেন তাঁকে বিরক্ত না করে। ঘরে গিয়ে ধ্যানে বসেন তিনি। ধ্যান করতে করতেই রাত ৯টা ১০ মিনিটে আনন্দলোকে যাত্রা করেন। 

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*