ওয়েস্ট উইন্ড আবাসনের পুজো

বৃষ্টির রিমঝিম আওয়াজ এখনও থামেনি। আকাশে কখনও-সখনও সাদা মেঘের উঁকিঝুঁকি, কখনও বাদল মেঘের ঘনঘটা। এরই মাঝে মা এলেন। আনন্দময়ীর আগমনের নুপুরধ্বনিতে মাতোয়ারা সারা ভুবন। অবশ্য আয়ূষ, দিতি-দের পুজো শুরু হয়েছে বেশ কিছুদিন আগে থেকে। শুধু আয়ূষ, দিতি কেন, এই মহানগরীর আবাসনগুলিতে পুজোর দু-মাস আগে থেকেই শুরু হয়ে যায় মায়ের আগমনের প্রস্তুতি। সেই যে যেদিন গ্রামের বাড়ি থেকে টেলিফোনে মামাদাদু বলল, শিউলিতে ভরে গেছে আমাদের উঠোন, তখন থেকেই প্রাণ হয়ে গেছে উতলা। মনের ক্যানভাসে শুধুই কাশের ছবি, কখনও-বা পদ্ম-শালুকের ছবি ভেসে বেড়াচ্ছে। পড়াশোনায় মন লাগে না। কিন্তু উপায় নেই, স্কুলের পড়াশোনা তো করতেই হবে। তবে বিকেলে ফাঁক পেলেই বড়োদের সঙ্গে পুজোর রিহার্সালে মেতে ওঠে কচিকাঁচারা। কলকাতার প্রায় সব আবাসনেই—শুধু কলকাতাই বা কেন, দিল্লি, মুম্বাই, চেন্নাই, ভুবনেশ্বর, হায়দরাবাদ, বেঙ্গালুরু—যেখানেই দুর্গাপুজো হয় সেখানেই প্রায় একই ছবি।

 

পুজোকে কেন্দ্র করে আবাসনগুলি যেন মিলনমেলায় পরিণত হয়। নামী ডাক্তারবাবু, সিরিয়াস প্রফেসর অথবা ব্যস্ত আইটি প্রফেশনাল সারা বছর ফুরসত ফেলার সময় না থাকলেও এই পাঁচটি দিন অধিকাংশ সময়ই কেটে যায় আবাসনের পুজোয়। কচিকাঁচাদের তো ফ্ল্যাটে যেতে মনই চায় না। সারাটা দিন মণ্ডপে কাটিয়ে দিলেই হয়। খাওয়া-দাওয়া তো কমিউনিটি সেন্টারে হচ্ছেই। শুধু মাঝে মাঝে ড্রেস চেঞ্জ করতে ওপরে যাওয়া। আর মা-বাবারা যে যার মতো আড্ডায় ব্যস্ত, তাদের ডিসট্রাব করাটা কি ঠিক! সুতরাং এই কটা দিন শুধুই ‘আমরা সবাই রাজা’।

বারোয়ারি বা বাড়ির পুজোর সঙ্গে এখনকার আবাসনের পুজোগুলো সমানে সমানে পাল্লা দিচ্ছে। পুজো, অঞ্জলি, আরতি, ভোগ সবেতেই নিষ্ঠা। প্রতিমা, মণ্ডপেও আছে বৈচিত্র্য। হয় কুমারীপুজোও। তবে সবথেকে বেশি মন কাড়ে আবাসনগুলির সন্ধাবেলার সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। ছোটোদের পার্টিসিপেশন সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য। বড়োদের পরিবেশনাও ভালো হয়। এ ছাড়াও নামী আর্টিস্টরাও আবাসনগুলির সান্ধআসর মাতিয়ে দেন। এইরকমই একটি আবাসন ওয়েস্ট উইন্ড আবাসন। ওয়েস্ট উইন্ড রেসিডেন্টস ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন-এর দুর্গাপুজোয় ক্ষুদে শিল্পীরা গান গেয়ে মা-কে আবাহন করে। আর পুজোর পাঁচটা দিনেই পরপর সাজানো রয়েছে একটার পর একটা ইভেন্ট।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*