সিঙ্গুর থেকেই ‘কৃষকদরদী’ বার্তা দিলীপ-সুকান্ত-শুভেন্দুর

বঙ্গ রাজনীতিতে পরিবর্তনের পথে উল্লেখযোগ্য মোড় ছিল তৃণমূলের সিঙ্গুর আন্দোলন। এবার সেই সিঙ্গুরের মাটিতে দাঁড়িয়েই ফের পালাবদলের ডাক দিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বাংলার কৃষকদের প্রতি রাজ্য সরকার উদাসীন, অভিযোগ করেছেন তিনি।

উল্লেখ্য, একগুচ্ছ দাবি সামনে রেখে সিঙ্গুরে তিনদিন ব্যাপী আন্দোলন কর্মসূচি নিয়েছে রাজ্য বিজেপির কিষান মোর্চা। মঙ্গলবার এই আন্দোলনের প্রথম দিনে সিঙ্গুরের লোহাপট্টি থেকে সিংহ ভেড়ি পর্যন্ত মিছিল করে গেরুয়া শিবির। উপস্থিত ছিলেন রাজ্য বিজেপির একাধিক প্রথম সারির নেতা। রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ, বিধানসভায় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, রাহুল সিনহা এদিনের মিছিলে হাঁটেন।

এদিন রাজ্য সরকারের সমালোচনায় সুর চড়াতে দেখা যায় শুভেন্দু অধিকারীকে। একদা তৃণমূলের এই সৈনিক দাবি করেন, ‘কৃষকদের উন্নয়নের জন্য রাজ্য সরকার কোনও পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।’ চলতি বছর বাঁধ ভেঙে যাওয়ার কারণে এবং অত্যাধিক বর্ষণে খানাকুল, গোঘাট, চন্দ্রকোনা, ঘাটাল থেকে শুরু করে পূর্ব বর্ধমানের একাধিক এলাকা তিনবার করে প্লাবিত হয়েছিল। এই মন্তব্যকে সামনে রেখে শুভেন্দু বলেন, ‘এই বন্যা পরিস্থিতির জন্য কৃষকরা আর্থিকভাবে বিপুল ক্ষতির মুখে পড়েছিলেন। আলু চাষের মধ্য দিয়ে সেই ক্ষতিপূরণের চেষ্টায় ছিলেন কৃষকরা। কিন্তু, কৃষকদের হাতে এসে পৌঁছেছিল নষ্ট হয়ে যাওয়া বীজ।’ সারের কালোবাজারি হচ্ছে বলেও দাবি করেছেন তিনি। এছাড়াও কৃষকদের ফসলের ক্ষতির জন্য রাজ্যের বেহাল সেচ ব্যবস্থাকেও দুষেছেন শুভেন্দু। তাঁর কথায়, ‘এভাবে চলতে থাকলে কৃষকদের জমি বিক্রি বা আত্মহত্যা ছাড়া কোনও উপায় থাকবে না।’

শুধু শুভেন্দু অধিকারী নন, এদিন রাজ্য সরকারের কৃষকদের প্রতি মনোভাব প্রসঙ্গে সুর চড়ান দিলীপ ঘোষ এবং সুকান্ত মজুমদারও। সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘কৃষকদের পাশে দাঁড়াচ্ছে না রাজ্য সরকার। এরফলে পরিযায়ী শ্রমিক হয়ে অন্য রাজ্যে চলে যাওয়া বা আত্মহত্যা এই দুটি পথই তাঁদের কাছে খোলা থাকে।’ এদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে উদ্দেশ্য করে এদিন দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘কৃষকদের জমি ফেরত দিক রাজ্য। না হলে তাঁদের চাকরি দেওয়া হোক।’

বিধানসভা নির্বাচনের পর লোকসভার কথা মাথায় রেখে সংগঠনে শান দিচ্ছে গেরুয়া শিবির। এই প্রেক্ষিতে বিজেপির এই ‘সিঙ্গুর আন্দোলন নীতি’ অত্যন্ত ইঙ্গিতপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও এই নিয়ে বিশেষ মাথা ঘামাতে নারাজ রাজ্যের শাসক দল। তৃণমূল নেতাদের দাবি, ‘পুরভোটে পরাজিত হবে BJP। তাই নজর ঘোরাতে আন্দোলনের নাটক।’

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*