৩ ফেব্রুয়ারি থেকে খুলছে স্কুল, নবান্ন থেকে ঘোষণা মমতার

৩ ফেব্রুয়ারি থেকে রাজ্যে স্কুল খুলছে। সোমবার নবান্নে জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অষ্টম শ্রেণি দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত ক্লাস শুরু হবে অফলাইনে। পঞ্চম থেকে সপ্তম শ্রেণির জন্য আপাতত ‘পাড়ায় পাড়ায় পাঠশালা’। অন্যদিকে কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়েরও পঠনপাঠন শুরু হবে ৩ তারিখ থেকে অফলাইনেই। এদিন সাংবাদিক সম্মেলন করে জানিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। একইসঙ্গে কোভিড বিধিনিষেধের একাধিক ক্ষেত্রে ছাড়ও ঘোষণা করা হয়েছে।

মন্ত্রিসভায় একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের কথাও এদিন জানান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টুডেন্ট ইন্টার্নশিপ স্কিম, জয়হিন্দ বাহিনীর মতো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দেউচা পাচামির জন্য জমিদাতাদের ক্ষেত্রে কনস্টেবল পদে চাকরিরও সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাঁর সরকার।

কী কী ঘোষণা করলেন মমতা-

*  ৩ ফেব্রুয়ারি থেকে স্কুল খুলবে। অষ্টম শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়ারা স্কুলে যাবে। ক্লাস শুরু হবে কলেজ, ইউনিভার্সিটিরও।

* পঞ্চম থেকে সপ্তম শ্রেণির পঠনপাঠন হবে ‘পাড়ায় পাঠশালা’য়। ছোটদের স্কুল এখনই খুলছে না।

* ৪, ৫ সরস্বতী পুজো। ছেলেমেয়েরা পুজো করতে পারবে।

* সরকারি, বেসরকারি অফিসে ৭৫ শতাংশ হাজিরা নিয়ে হবে কাজকর্ম।

* স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে জয় হিন্দ বাহিনী, মন্ত্রিসভা অনুমোদন পেল।

* ডেউচা পাচামি তে যাদের জমি নেওয়া হয়েছে তাদের পুলিশের কনস্টেবল পদে নিযুক্ত করা হবে, মন্ত্রী সভায় সিদ্ধান্ত।

* ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত করোনা বিধিনিষেধ চলবে। রাতের বিধিনিষেধ রাত ১১টা থেকে ভোর ৫টা

* ৭৫ শতাংশ নিয়ে সিনেমা হল, থিয়েটার হল, রেস্তোরাঁ এবং বার চালু থাকতে পারবে। স্পোর্টস অ্যাকটিভিজ ৭৫ শতাংশ আসনে লোক নিয়ে। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, রাজনৈতিক কর্মসূচিও ৭৫ শতাংশ আসনে লোক নিয়ে করা যাবে। নেতাজি ইনডোরে কোনও অনুষ্ঠান হলে ৭৫ শতাংশ আসন ক্ষমতা নিয়ে অনুষ্ঠান করা যাবে। হলগুলোও ৭৫ শতাংশ লোক নিয়ে চলবে। রাস্তার মিটিং মিছিলে একটু কড়াকড়ি রাখা হয়েছে। সবটা একসঙ্গে ছাড়লে সমস্যা হতে পারে। সিএবিরও আইপিএল আসছে। সুতরাং একটা ভেন্যু থেকে ৭৫ শতাংশ ক্যাপাসিটি রেখে করতে পারবে।

* সুইমিং পুল খুলে দেওয়া হল। পার্ক খুলে দেওয়া হচ্ছে। বিয়েবাড়িতে ৭৫ শতাংশ উপস্থিতিতে ছাড়। ১৬ ফেব্রুয়ারি ইন্ডাস্ট্রিয়াল মিট হবে। চেম্বার্সগুলোর সঙ্গে।

* মুম্বই, দিল্লির বিমান নিয়মিত ওঠানামা করবে। বেঙ্গালুরুটা যেহেতু বেশি আছে, আমরা অপেক্ষা করছি। ইউকে কলকাতা উড়ান হবে। এখানে নেমে আরটিপিসিআর করতে হবে।

* ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টুডেন্ট ইন্টার্নশিপ স্কিম ২০২২ চালু হচ্ছে। যারা বাংলায় থাকে এবং পড়াশোনা করছে আইটিআই, পলিটেকনিক পড়ুয়ারাও বা সমগোত্রীয় কোর্স পড়ে অন্তত ৬০ শতাংশ নম্বর যারা পাবে, ৪০ বছর বয়সের মধ্যে তারা এটা আবেদন করতে পারবে। বছরে ৬ হাজার করে ইন্টার্ন নেব। সরকারি স্কিমগুলোর সঙ্গে তাদের পরিচিত করাব। সামাজিক সেবা শিখবে। ৫ হাজার করে রেমুনারেশন দেওয়া হবে। তাদের প্রথমে ১ বছর ইন্টার্নশিপ। ভাল কাজ করলে তাদের আবার রিভিউ করা হবে। অনলাইন আবেদন আসবে। সিলেকশন বোর্ড দেখবে। মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে একটি বোর্ড তৈরি হবে। এডুকেশন ডিপার্টমেন্টের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে এটা হবে। যারা নির্বাচিত হবে তারা রাজ্য সরকারের বিভিন্ন অফিসে, রাজ্য সরকারের আওতাধীন অফিসে, ব্লক অফিস, মহকুমা অফিস, জেলা অফিসে। যে যেখানে বসবাস করে কাছাকাছি দেওয়া হবে।

* জয়হিন্দ বাহিনী করছি। চারটি জ়োনে ভাগ করছি। জঙ্গলমহল, শিলিগুড়ি উত্তরবঙ্গের, কলকাতা ও ব্যারাকপুর। তবে সব জেলার ছেলেমেয়েকেই যুক্ত করা হবে। তাদের উন্নত মানুষ তৈরির প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। আজাদহিন্দ ফৌজের বাহিনী করেছিলেন নেতাজি, সেই ড্রেসটাই আমরা ব্যবহার করব। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর নাম ও স্লোগান আগামী প্রজন্ম স্মরণ করতে পারে। স্বামী বিবেকান্দের উন্নতর মানুষ তৈরির চেষ্টাই এই জয়হিন্দ বাহিনীর কাজ হবে। এর লোগো আমি তৈরি করে দেব। শপথ নেওয়ার স্লোগানও তৈরি করে দেব। স্বাধীনতার ৭৫ বছরে নেতাজি, বিবেকানন্দকে শ্রদ্ধা জানিয়ে এটা করছি।

* আমরা ফ্রিডম মিউজিয়ামও তৈরি করছি। এই মিউজিয়ামের কাজ চলছে। মাসখানেকের মধ্যে উদ্বোধন করে দিতে পারব। আলিপুরের মিউজিয়াম ব্রাত্য বসু, শুভাপ্রসন্নদা, ফিরহাদ হাকিম, মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী গিয়ে দেখে আসবেন। আর কিছু দরকার থাকলে বলবেন। অনেক কিছু হযবরল না হয়। সুন্দর হয় যেন। দেওয়ালে সুন্দর রং হয়েছে। আমি চাই একদিন স্বাধীনতা আন্দোলনে আত্মবলিদান দিয়েছেন যাঁরা, তাঁদের স্মরণ করে পেন্টিং করা হোক। আমি সেদিন নিজে থাকব। আমাদের অনেক পেন্টার আছেন।

*  দেউচা পাচামি ক্যাবিনেটে অ্যাপ্রুভ করেছি প্রতি পরিবারের একজনকে জুনিয়র ও সিনিয়র কনস্টেবল নেওয়া হবে। ৫১০০ পোস্ট আজকেই অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ১৩৯ জন জমি দিতে রাজি হয়েছেন। যদিও প্রথম পর্যায়ে কাজ আমাদের জমিতেই হবে। যারা জমি দিতে রাজি, তাদেরটাই নেওয়া হবে শুধু। আমাদের হাতে ১ হাজার একরের মতো জমি আছে। তবে স্থানীয় ছেলেমেয়ের সমর্থন দরকার। তাই নতুন নিয়োগ হবে কনস্টেবল পদে। যারা জমি দেবে তাদের পাট্টাও দেব। জমির বদলে জমি, ক্ষতিপূরণ সবই থাকবে।

*  কোভিড প্রোটোকল মেনে ১ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হবে পাড়ায় পাড়ায় সমাধান। দুয়ারে সরকার শুরু হবে ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*