তিস্তার ধ্বংসলীলার মাঝেই ধস সিকিমে! নদীগর্ভে তলিয়ে যাচ্ছে জাতীয় সড়ক, আটকে বহু পর্যটক

Spread the love

বুধবার রীতিমত ফুঁসতে শুরু করেছে তিস্তা। বৃহস্পতিবারও সেই ধ্বংসলীলা অব্যাহত। এবার সিকিমের ২৯ মাইল এলাকার কাছে বড়সড় ধস নামল। ধসের ফলে ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক (সাবেক ৩১এ জাতীয় সড়ক) এখন সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তিস্তা ব্রিজ থেকে সিকিম যাওয়ার পথে বেশ কিছু জায়গায় বড় আকারের ধসের কারণে জাতীয় সড়ক নিচের দিকে বসে গিয়েছে। বুধবার দুপুর নাগাদ ২৮ মাইল এলাকায় ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের রাস্তায় ধস নামে। জাতীয় সড়কের বিভিন্ন জায়গা ধীরে ধীরে তিস্তার নদীগর্ভে তলিয়ে যাচ্ছে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর।
গতকাল থেকেই তিস্তায় হড়পা বানের জেরে উত্তর সিকিমের একাংশ প্রায় লন্ডভন্ড। নিখোঁজ সেনা থেকে শুরু করে বহু স্থানীয় মানুষ। এই পরিস্থিতিতেই সিকিমে আটকে পড়েছেন বহু পর্যটক। শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, জানা যাচ্ছে, উত্তর সিকিমের লাচুং-লাচেনে আটকে প্রায় ৩ হাজার পর্যটক। তাঁর মধ্যে রয়েছেন বহু বাঙালি। আবহাওয়ার উন্নতি হলে চপার নামানোর পরিকল্পনা সিকিম প্রশাসনের। পর্যটকদের সমতলে নামিয়ে আনার চেষ্টা চলছে। তারইমধ্যে ধসের জেরে সিকিমের জাতীয় সড়কে যান চলাচল বন্ধ। এর ফলে ফেরার পথও আপাতত অবরুদ্ধ রয়েছে।
বুধবার সকাল থেকেই ধ্বংসলীলা চালাচ্ছে তিস্তা। হুড়হুড় করে জল গড়াতে থাকে তিস্তার খাত ধরে। সিকিমে প্রবল ক্ষয়ক্ষতির পরে সমতলে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয় তিস্তার দু’ধারে। ফলে সেবক থেকে বাংলাদেশ পর্যন্ত সমতলেও দেদার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, কোথায় ঠিক কতটা ক্ষতি, তা জল কমার পরে স্পষ্ট হবে। গজলডোবা ব্যারাজেরও ক্ষতি হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন নবান্নে জানিয়েছেন, জল কমার সঙ্গে সঙ্গেই ব্যারাজ মেরামতি শুরু হবে। আজ, বৃহস্পতিবার রাজ্যের সেচমন্ত্রী এবং সেচসচিব উত্তরবঙ্গে আসছেন।
এ দিন সকালে সেবকের রেলসেতুতেও দেখা গেল, মাত্র ফুট চারেক নীচ দিয়ে বইছে তিস্তা। এই পথে রেল চলাচলের গতি কমিয়ে দেওয়া হয়। জলপাইগুড়ি শহর লাগোয়া তিস্তা রেল সেতুর কাছেও জল বেড়ে যায়। সেই সেতুর উপর দিয়ে অসম এবং দিল্লিগামী দু’টি রাজধানী-সহ অন্য ট্রেন চালানো হয়েছে অত্যন্ত ধীরগতিতে। দার্জিলিং এবং কালিম্পং জেলা বাদ দিলে শুধু সমতলে তিস্তার দু’পার থেকে অন্তত পাঁচ হাজার বাসিন্দাকে উদ্ধার করেছে প্রশাসন। জলপাইগুড়ি এবং কোচবিহার মিলিয়ে খোলা হয়েছে ২৮টি ত্রাণশিবির।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*