করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত প্রিন্স চার্লস

করোনা ভাইরাস থেকে রেহাই পাচ্ছেন না কেউ। এবার আক্রান্ত হলে ব্রিটেনে রাজকুমার প্রিন্স চার্লস। তাঁর রিপোর্টে এই ভাইরাসের সংক্রমণ পাওয়া গিয়েছে। আগেও ব্রিটেনে অনেকের শরীরে এই ভাইরাস পাওয়া গিয়েছে। তবে এবার করোনার থাবা খোদ রাজ পরিবারে।

রাজ পরিবারের তরফ থেকে এই খবর নিশ্চিত করা হয়েছে। ৭১ বছর বয়সী চার্লসের খুব সামান্য কিছু লক্ষণ দেখা গিয়েছে। তবে আপাতত তাঁর শারীরিক অবস্থা ভালো আছে বলে জানা গিয়েছে।

তাঁর স্ত্রী ক্যামিলাকেই পরীক্ষা করা হয়েছে। তবে তাঁর শরীরে কোনও সংক্রমণ ধরা পড়েনি। যদিও তাঁরা দু’জনেই এখন বারমোলে আইসোলেশনে রয়েছেন। গত কয়েকদিন প্রিন্স বাড়ি থেকে কাজ করছিলেন বলে জানা গিয়েছে। তবে কার থেকে তাঁর এই সংক্রমণ হল, তা এখনও স্পষ্ট নয়। কারণ কাজের সূত্রে বহু মানুষের সঙ্গে মেলামেশা করেন।

ব্রিটেনে এখনও পর্যন্ত ৪২২ জনের মৃত্যু হয়েছে এই ভাইরাসে। এর আগে মোনাকোর প্রিন্স অ্যালবার্টের সঙ্গে দেখা হয়েছিল তাঁর। তিনিও করোনা আক্রান্ত। তাঁর থেকে এই সংক্রমণ হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

গত ১২ মার্চ রাজপ্রাসাদে ফিয়েছিলেন তিনি। ফলে, তাঁর এই আক্রান্ত হওয়ার খবরে নতুন আতঙ্ক তৈরি হয়েছে বাকিংহাম প্যালেসে। সেখানকার বয়জ্যেষ্ঠ সদস্যরা এই ভাইরাসে আক্রান্ত কিনা, তা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। গত কয়েকদিন আগেও হ্যান্ডশেক এড়িয়ে নমস্তে করতে দেখা গিয়েছে প্রিন্স চার্লসকে। তা সত্বেও এই রোগে আক্রান্ত হলেন তিনি।

ব্রিটেনেও তিন সপ্তাহের লকডাউন ঘোষণা করেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। তিনি সোমবার লন্ডনে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণ দেওয়ার সময় একথা ঘোষণা করেন।

বরিস জনসন জানিয়েছেন, এই লকডাউন চলাকালীন একবার ব্যায়াম, জরুরি পণ্যসামগ্রী ও ওষুধ কেনা ছাড়া কেউ আর ঘরের বাইরে পা রাখতে পারবে না। একসঙ্গে দু’জনের বেশি কোথাও জমায়েত করা যাবে না। আইন ভঙ্গকারীদের শাস্তির কথাও বলেছেন৷ সেক্ষেত্রে জরিমানা হবে ৩০ পাউন্ড । কেউ নির্দেশ না মানলে পুলিশ ব্যবস্থা নিতে পারবে বলে তিনি জানান৷

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য, এই তিন সপ্তাহে একমাত্র নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দোকানপাট ছাড়া সবকিছুই বন্ধ রাখা হবে। জনগনকে তিনি অবশ্যই বাড়িতে থাকতে বলেছেন। লাইব্রেরি, খেলার স্থান, ব্যায়ামাগার এমনকি উপাসনালয়ও এই সময় বন্ধ রাখা হবে বলে ঘোষণা করেন তিনি। পার্ক খোলা থাকলেও জনসমাগম সীমিত থাকবে না বলে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন৷

সামাজিক অনুষ্ঠান, বিয়ে ও ধর্মীয় সমাবেশ আপাতত বন্ধের কথা ঘোষণা করার পাশাপাশি তিনি জানিয়েছেন, তিন সপ্তাহ পর পরিস্থিতি বুঝে ঠিক করা হবে পরবর্তী পর্যায়ে কি করণীয়৷

দেশের পরিস্থিতি সম্পর্কে বরিস জনসনের অভিমত, করোনাভাইরাস মোকাবিলাই হল ব্রিটেনের কাছে শতাব্দীর সবচেয়ে ভয়ংকর ঝুঁকির বিষয়। এই ভাইরাসের বিস্তার আটকাতে না পারলে এক ভয়ানক পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে ৷ এজন্য সকলের ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। তা নাহলে এমন একটা সময় আসবে যখন বিশ্বের কোনও স্বাস্থ্য ব্যবস্থাই এই ভাইরাসই মোকাবেলা করতে অক্ষম হবে৷ কারণ মৃত্যুর হার তখন এমন পর্যায়ে পৌঁছে যাবে যে চিকিৎসার জন্য ডাক্তার, নার্স এমনকি ভেনটিলেট, ইনটেনসিভ বেড কোনও কিছুই তখন পাওয়া যাবে না।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*