নানা রঙের পাসপোর্ট

তপন মল্লিক চৌধুরী

কমলা-সাদা, নীল-লাল, সবুজ-কালো—কত রঙের পাসপোর্ট। দেশে দেশে ভিন্ন রঙের পাসপোর্ট নিয়ে কত কথা, কত রহস্য যে রয়েছে, তার শেষ নেই। তবে সবচেয়ে প্রচলিত ধারণা হলো, পাসপোর্টের রং তার দেশের ক্ষমতার ওপর নির্ভর করে। আসলে কথা কিন্তু তা নয়। জেনে আরও অবাক হবেন, কোন দেশের পাসপোর্টের রং কিংবা আকৃতি কেমন হবে, তা দেশটির সরকারের ইচ্ছার ওপরই নির্ভর করে।

সম্প্রতি যুক্তরাজ্য সরকার ঘোষণা করেছে, তাদের প্রচলিত গাঢ় লাল রঙের ওপর সোনালি নকশা করা পাসপোর্ট বদলে যাচ্ছে। আর এতেই নারাজ দেশটির অনেক পাসপোর্টধারী। ১৯৮৮ সালে চালু করা এই পাসপোর্টটির বদলে অস্ট্রেলিয়ার পাসপোর্টের মতোই দেখতে গাঢ় নীল রঙের পাসপোর্ট চালু হতে চলেছে ২০১৯ সাল থেকে। প্রায় ১০০ বছর আগে যুক্তরাজ্যে এই নীল রঙের পাসপোর্টই চালু ছিল।

আন্তর্জাতিক পাসপোর্টের তথ্য সংরক্ষণকারী আর্টন গ্রুপে এ নিয়ে রয়েছে অনেক তথ্য। তাদের মতে, বিশ্বে প্রচলিত পাসপোর্টগুলোর মধ্যে প্রধান চার রং হলো লাল, সবুজ, নীল ও কালো। তবে কোন দেশের পাসপোর্টের রং কেমন হবে এর ধরাবাঁধা কোনো নিয়ম নেই। একটা দেশের পাসপোর্টের আকার, রং কিংবা কার্যবিধি নিয়ন্ত্রণ করে আন্তর্জাতিক সিভিল এভিয়েশন সংস্থা (আইসিএও)। একটি আইসিএওর কাছ থেকে বিভিন্ন দেশ যেকোনো রঙের পাসপোর্ট পছন্দ করে নিতে পারে। তবে পাসপোর্ট পছন্দের কোনো বিশেষ নিয়ম না থাকলেও পাসপোর্টের রং একটি দেশ সম্পর্কে অনেক তথ্যই প্রকাশ করে থাকে।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রায় সব দেশেই প্রচলিত গাঢ় নীল রঙের পাসপোর্ট। অন্যদিকে ক্যারিবীয় এবং কমন মার্কেট দেশগুলোর পাসপোর্ট নীল রঙের। এটা রাজনৈতিক কিংবা ভৌগোলিক কারণে হতে পারে। আবার কেউ কেউ বলে থাকেন, অতীতের কমিউনিস্ট ইতিহাসের কারণে ইউরোপীয় ইউনিয়ন গাঢ় লাল ব্যবহার করে। অন্যদিকে নীল পাসপোর্ট উত্তর আমেরিকা, দক্ষিণ আমেরিকা ও ওশেনিয়ার দেশগুলোর নতুন বিশ্ব গড়ে তোলার প্রতীক। আবার তুরস্ক তাদের পাসপোর্ট গাঢ় লালে পরিবর্তন করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগ দেওয়ার আশা নিয়ে। সুইজারল্যান্ড তাদের পাসপোর্টে উজ্জ্বল লাল রঙের ওপর তাদের পতাকার যোগ চিহ্ন রেখেছে।

বেশির ভাগ দেশই গাঢ় রংকেই প্রাধান্য দেয়। কেননা তা পাসপোর্টের দাগ কিংবা বিবর্ণকে দৃশ্যমান করে তোলে না। সাধারণ, কূটনৈতিক বা বিশেষ পাসপোর্টের রং কী হবে, তাও দেশগুলোই বেছে নিতে পারে।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*