ধেয়ে আসছে অশনি, বাংলার কৃষকদের সতর্ক করল নবান্ন

বাংলার আকাশে সংকেত অশনির। এই প্রাকৃতিক দুর্যোগের থেকে বাঁচতে আগেভাগে বাংলার কৃষকদের সতর্ক করল কৃষি দফতর। অতীতে আমফান, ফণি থেকে শিক্ষা নিয়ে এ বার যাতে কৃষকরা ক্ষতির মুখে না পড়েন, তাই তাঁদের কৃষি দফতরের তরফ থেকে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশিকা দেওয়া হল।

এদিন কৃষি দফতরের জারি করা নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, দক্ষিণ আন্দামান সাগর এবং তত্সংলগ্ন দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে একটি নিম্নচাপ ক্ষেত্র সৃষ্টি হয়েছে। এটি উত্তর পশ্চিম উপকূলে অগ্রসর হয়ে সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা। এরপর এটি আরও উত্তর পশ্চিমে সরে গিয়ে আগামী ১০ মে অন্ধ্র-ওড়িশা উপকূলের অদূরে মধ্য পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে উপস্থিত হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। এর ফলে আগামী ১০-১৩ মে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের জেলাগুলোতে প্রবল বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এই অবস্থায় কৃষিকাজের সঙ্গে যুক্ত মানুষদের সতর্ক করছে রাজ্যের কৃষি দফতর।

এই সতর্কবার্তায় কৃষি দফতরের তরফ থেকে বলা হয়েছে, মাঠের পাকা ধান অতিসত্বর কেটে ঝাড়াই বাছাই করে গুদামজাত করতে। প্রয়োজনে যন্ত্রের সাহায্য নেওয়ার কথাও বলা হয়েছে। সবজি বা তৈলবীজের ক্ষেত্রে জমিতে জমা জল যাতে দ্রুত বের করে দেওয়া যায়, সেই ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে। প্রয়োজনে দুর্যোগ কাটার পর ছত্রাকনাশক ব্যবহার করতে বলা হয়েছে । কলা, পেঁপে এই জাতীয় সবজির ক্ষেত্রে যাতে ঝড়ের সময় গাছ পড়ে না যায়, সে জন্য ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে কৃষকদের। পানের বরজ সবজির মাচার ক্ষেত্রে শক্ত করে বাঁধন দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে নির্দেশিকায়। কৃষকদের বলা হয়েছে, দফতর থেকে প্রচারিত কৃষি বুলেটিনের দিকে নজর রাখতে।

এ দিন এই নির্দেশিকা প্রসঙ্গে রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “যে কোনও প্রাকৃতিক দুর্যোগের আগে এটি একটি কন্টিনিউয়াস প্রসেস। করোনাকালে বা তার আগে যখনই প্রাকৃতিক দুর্যোগ হয়েছে, আমরা কৃষি দফতর কৃষকদের সঙ্গে থেকেছি। কিভাবে তাঁদের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কমানো যায় তার পরামর্শ দিয়েছি। এ বারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। তবে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের উপর তো আর মানুষের হাত নেই। এত সতর্কতার পরেও কৃষকদের বহু ক্ষেত্রে ক্ষয়ক্ষতি হয়। রাজ্য সরকার সে ক্ষেত্রে সব সময় কৃষকদের পাশে থেকেছে। কেন্দ্র অর্থসাহায্য না করলেও কৃষকের ফসলের জন্য ক্ষতিপূরণ দিয়েছে রাজ্য সরকার। আমরা চাই যতটা সম্ভব কম ক্ষয়ক্ষতি হোক। আর সে কারণেই এই প্রচেষ্টা।”

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*