ফের NDA-এর মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ, ডেপুটি সুশীল মোদী

ডিগবাজি খেতে নীতীশ কুমারের যে জুড়া মেলা ভার, তা আর নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না। এর আগে তিনি চারবার এনডিএ-তে ঢুকেছেন এবং বেরিয়েছেন। ফের একবার পাল্টি খাচ্ছেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী। গতকাল অবধি ছিল গুঞ্জন। ২-৩ দিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেবেন নীতীশ বলে শোনা যাচ্ছিল। শুক্রবার (২৬ জানুয়ারি), প্রজাতন্ত্র দিবসের দিন সেই সিদ্ধান্ত প্রায় পাকা বলে জানা গেল। সরকারি ঘোষণা করা হয়নি ঠিকই। কিন্তু, প্রায় নিজের হাতে গড়া ইন্ডিয়া জোট ছেড়ে যে তিনি ফের মোদীর জাহাজে উঠছেন, তা একপ্রকার নিশ্চিত। বিজেপি নেতাদেরও সুর বদল হয়েছে। সুশীল মোদী বহস্পতিবারও বলছিলেন, নীতীশের জন্য বিজেপির দরজা বন্ধ। আজ বলছেন, রাজনীতিতে বন্ধ দরজা যে কোনও সময় খুলতে পারে।

সূত্রের খবর, কথা-বার্তা এতদূর এগিয়ে গিয়েছে যে, ২৪ ঘণ্টার মধ্য়েই মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিতে পারেন তিনি। রবিবারই বিহারে শপথ নিতে পারে বিজেপি-জেডিইউ সরকার। মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন? কেন নীতীশ কুমার। হত বেশ কয়েক বছর ধরে তো তিনি এই প্রবণতাই তৈরি করেছেন। জোট বদলাবে জেডিইউ, কিন্তু, মুখ্যমন্ত্রী থেকে যাবেন নীতীশ। অন্যদিকে, সুশীল মোদী তাঁর ডেপুটি হবেন বলে শোনা যাচ্ছে। সরকার গঠনের পরই বিধানসভার নয়া অধ্যক্ষও নির্বাচন করা হবে।

বস্তুত, নীতীশ যে ফের পাল্টি খেতে পারেন, এর আগে তিনি নিজেই তার একটা ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছিলেন। বিহারের আরজেডি এবং কংগ্রেস চেয়েছিল, নীতীশ কুমার ইন্ডিয়া জোটের আহ্বায়ক হন। কিন্তু, ইন্ডিয়া জোটের ভার্চুয়াল বৈঠকে যখন এই প্রস্তাব করা হয়, নীতীশ তা প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। কেন তিনি ইন্ডিয়া জোটের আহ্বায়ক হতে চান না, সেই সময় তার কোনও ব্যাখ্যা তিনি দেননি। পরে জানা যায়, এর পিছনে লালুপ্রসাদ যাদবের এক ছক ছিল। তিনি নীতীশের উপর চাপ সৃষ্টি করছিলেন। লালু, নীতীশকে বলেছিলেন, তিনি বিহারের মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছেড়ে দিলে, সেই পদে তেজস্বী বসবেন। আর নীতীশকে ইন্ডিয়া জোটের মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে তুলে ধরা হবে। কিন্তু, এই ফাঁদে পা দিতে চাননি নীতীশ। সেই সময় থেকেই আরজেডির সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করা শুরু করেছিলেন নীতীশ।

দুই দলের সম্পর্কের চূড়ান্ত অবনতি হয়, কর্পুরি ঠাকুরের জন্মদিবসে নীতীশের বক্তৃতাকে কেন্দ্র করে। ওই বক্তৃতায় তিনি আরজেডি-র নাম না করে পরিবারতন্ত্রের রাজনীতির তীব্র সমালোচনা করেন। পাল্টা নাম না করে সোশ্যাল মিডিয়ায় নীতীশকে তীব্র কটাক্ষ করেন লালুপ্রসাদের মেয়ে। এরপরই ভাঙন একপ্রকার নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল। ইন্ডিয়া জোটের জন্য এটা যে একটা বড় ধাক্কা, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*