কান্নায় ভেঙে পড়লেন যাদবপুরের নিহত ছাত্রের মা, নদিয়ায় তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিনিধি দল

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের নিহত ছাত্রের নদিয়ার বগুলায়
গ্রামের বাড়িতে গিয়ে তার পরিবারের সঙ্গে দেখা করল তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিনিধি দল। তৃণমূল নেতা-নেত্রীরা বাড়িতে ঢুকতেই তাঁদের জড়িয়ে কান্নায় ভেঙে পড়লেন নিহত ছাত্রের মা। তাঁকে ঘিরে ধরে শান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করেন তৃণমূলের মহিলা প্রতিনিধিরা। যুবনেতা সায়নী ঘোষ নিহত ছাত্রের অভাগা মায়ের পায়ের নিচে বসেই তাঁকে শান্ত্বনা দিলেন। কথা বলারও চেষ্টা করলেন।

নিহতের মা বলেন, তাঁর ছেলে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করতে চাইত। বারবার জিজ্ঞসা করত, সেখানে তাঁকে ভর্তি করা হবে কিনা। চান্স পেয়েও খুব খুশি হয়েছিল। কিন্তু এমন ঘটনা ঘটতে পারে তা আঁচ করতে পারেননি তাঁরা। তাহলে ছেলেকে কখনই পাঠাতেন না তাঁরা। সন্তান হারানোর এই যন্ত্রণা তাঁরা কোনওদিন ভুলতে পারবেন না। তাঁর কোল খালি করে দেওয়া দোষীরা যেন শাস্তি পায়।

কান্না ভেজা চোখে মায়ের এমন কাতর আবেদন শুনে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, মুখ্যমন্ত্রী নিজেই বিষয়টি দেখছেন। তাই কেউ ছাড়া পাবে না। ছেলের মৃত্যুর সুবিচার হবেই। দোষীদের কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে। নিহত ছাত্রের ভাইয়ের পাশাপাশোনার বিষয়টি তাঁরা দেখবেন বলে জানিয়েছেন।

অন্যদিকে, তৃণমূল যুবসভানেত্রী সায়নী ঘোষের উদ্যোগে, পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল যুব কংগ্রেসের পক্ষ থেকে নিহত ছাত্রের পরিবারকে চব্বিশ ঘন্টা দেখভাল করার কথা জানানো হয়েছে। যে কোনও প্রয়োজনে স্থানীয় ৩ জন তৃণমূল যুব কংগ্রেসের কর্মীকে নিযুক্ত করা হয় এবং তৃণমূল যুব কংগ্রেসের মেডিকেল সেলের একজন প্রতিনিধি নিহত ছাত্রের মা, বাবা ও ভাইয়ের জন্য বিশেষ কাউন্সেলিং এবং রুটিন চেকআপ করবে।

এদিন প্রতিনিধি দলে ছিলেন ব্রাত্য বসু, কাকলি ঘোষ দোস্তিদার, শশী পাঁজা, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, সায়নী ঘোষ। নদিয়ার বগুলায় রওনা দেওয়ার আগেও ব্রাত্য একহাত নেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাম মনোভাবাপন্ন ছাত্রদের। ব্রাত্য বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে নিহত ছাত্রের পরিবারকে সমবেদনা জানাতেই এই প্রতিনিধি দল নদিয়া যাচ্ছে। দল ও সরকার সর্বতোভাব নিহত ছাত্রের পরিবারের পাশে রয়েছে, সেই বার্তা দেওয়া। ব্রাত্য আরও জানান, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, দলগত ও সরকারগতভাবে পরিবারের পাশে থাকতে হবে। প্রশাসন প্রশাসনের কাজ করছে। কিন্তু এই ঘটনা মোটেও কাম্য নয়।

বাম ও অতিবাম ছাত্রদের নিশানা করে ব্রাত্য বসুর অভিযোগ, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে দিনের পর দিন নৈরাজ্যকে প্রশ্রয় দেওয়া হয়। পাশাপাশি তাঁর প্রশ্ন বছর ছয়েক আগে তৈরি হওয়া হোক কলরবের নেতৃত্বরা আজ কোথায়? যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে তারা কতটা কনসার্ন? যাদবপুর প্রথম প্ৰাক্তনীদের নিয়ে একটা সিএসআর তহবিল গঠন করেছিল। হোক করলবের নেতৃত্বরা সেখানে কতটা অনুদান হিসেবে পাঠিয়েছে তা তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট দেখলেই বোঝা যাবে। প্রাক্তনীদের বিশ্ববিদ্যালয়, ছাত্র, শিক্ষকের ওপর কোনও দরদ আর সম্মান নেই। পাশাপাশি তিনি বামেদের নিশানা করে বলেন, মফঃস্বলের ছেলে যখন পড়তে এলে ভাল ইংরেজি না জানলেই তার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়া হয়। তাদের দলনেত্রীর ওপর শ্রদ্ধা থাকলে অত্যাচার করা হয়। যাদবপুরে একাংশের মধ্যে এমনই প্রবণতা তৈরি হয়েছে। সেখানে মাও, স্তালিনের নাম না করতে অত্যাচারিত হতে হয় বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*