দ্বাদশীর সন্ধ্যায় বিজেপির ঘরে ভাঙন ধরাল তৃণমূল। তৃণমূলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে পদ্ম ছেড়ে ঘাসফুলে যোগ দিলেন বাঁকুড়ার কোতুলপুরের বিধায়ক হরকালী প্রতিহার। অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ এই যোগদান। কারণ, বাঁকুড়া সেই জেলা যেখানে দু’টি লোকসভা কেন্দ্রই বিজেপির হাতে। সুভাষ সরকার ও সৌমিত্র খাঁ এখানকার সাংসদ। হরকালী সৌমিত্র খাঁয়ের লোকসভা কেন্দ্র বিষ্ণুপুরের অন্তর্গত কোতুলপুরের বিধায়ক। তাঁর তৃণমূলের যোগদান রাজ্য বিজেপি ও পরিষদীয় বিজেপির পক্ষে নিঃসন্দেহে একটা ধাক্কা।
তবে এই হরকালী প্রতিহারকে নিয়ে গত কয়েকদিন ধরে একটা জল্পনা চলছিল। এমনও শোনা গিয়েছিল, তিনি অভিষেকের ক্যামাক স্ট্রিটের অফিসেও আসেন। যদিও সে সময় অভিষেকের সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ হয়নি বলেই খবর। তবে জল্পনা ছিলই। আজ বৃহস্পতিবার তৃণমূল কংগ্রেস তাদের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এই খবর জানায়।
এই যোগদানের পর হরকালী প্রতিহার বলেন, “বাংলার মানুষের জন্য এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যেভাবে উন্নয়নের জোয়ার এনেছেন, সেই উন্নয়নে শামিল হতে চেয়েছিলাম আমি। বাংলার মানুষকে কেন্দ্রের সরকার নানাভাবে বঞ্চিত করছে। ১০০ দিনের টাকা, আবাসের টাকা থেকে বঞ্চনা করছে। তার প্রতিবাদ জানিয়েই আজ তৃণমূলে যোগ দিলাম।
এদিকে হরকালীর যোগদানের খবরে সৌমিত্র খাঁ বলেন, “মিষ্টি বিলি করা হবে। ২০১৪ সাল থেকে বিধায়ক হওয়ার জন্য চেষ্টা করছিলেন। টিকিট কোনও দল দেয়নি। আমাদের কাউকে ধরে টিকিট পায় এবার। আমি আর বিজেপি জিতিয়ে আনি। ওনার আর কিছুই হবে না। হরকালী প্রতিহার চলে গেল বলে বিষ্ণুপুর লোকসভা ২ লক্ষ ভোটে জিতব। ও চলে যাওয়ায় লাভ হল।”
২০২১ সালে প্রথম বিজেপির টিকিটে বিধানসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন হরকালী প্রতিহার। কোতুলপুর বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক হন। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে মনোনয়নের সময় কোতুলপুর বিডিও অফিস কার্যালয় চত্বরেই আক্রান্ত হয় তাঁর গাড়ি। সে সময় হরকালী প্রতিহার হামলার অভিযোগ তোলেন তৃণমূলের বিরুদ্ধে। পরবর্তীতে বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খাঁর সঙ্গে বিভিন্ন কর্মসূচিতে তৃণমূলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে সরব হতেও শোনা যায় তাঁকে। যদিও পঞ্চায়েত ভোটের পর থেকে বিজেপির সঙ্গে তাঁর দূরত্ব বাড়ছিল বলে জল্পনা শোনা যায়। সে জল্পনাই সত্যি হল এদিন।
Be the first to comment