‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে খুব শ্রদ্ধা করি’, বিচারপতি গাঙ্গুলির মুখে ভূয়সী প্রশংসা মমতার

মঙ্গলবার বিচারপতি পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তার আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশংসা শোনা গেল তাঁর মুখে। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের চোখে “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একজন সিজনড পলিটিশিয়ান।’ ২০২৩ সালের ১৭ জুলাই এজলাসে বসে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেছিলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অত্যন্ত সরল দায়িত্বশীল একজন রাজনীতিবিদ। এখনও তেমনটাই বিশ্বাস করেন বলেই জানালেন তিনি।

বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “আমি বিশ্বাস করি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সত্যিই একজন সরল মহিলা। দায়িত্বশীল রাজনীতিবিদ এবং পুরনো রাজনীতিবিদ, যিনি ব্যক্তিগত আক্রমণকে গ্রাহ্য না করে বিরোধিতা চালিয়ে গিয়েছেন। কংগ্রেসের বীরেরা যখন পালিয়েছেন, তখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে মাথায় লাঠি খেয়েছেন। মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছেন।”

এরপর স্বাভাবিকভাবেই উঠে আসে লোকসভা নির্বাচনের কথা। প্রশ্ন ওঠে যদি তৃণমূল সুপ্রিমোর বিরুদ্ধে লড়তে হয়? তার উত্তরেই এই প্রশংসাসূচক মন্তব্য করেন তিনি। প্রাক্তন বিচারপতি জানান, “দল আমাকে যেখান থেকে লড়তে বলবে আমি সেখান থেকেই লড়তে রাজি।” তৃণমূলের আইনজীবী সাংসদ কল্যাণ বন্দোপাধ্যায়কেও বেনজির আক্রমণ করেন তিনি। বলেন, “উনি নিজে টিকিট পান কিনা দেখুন আগে। কিছু মানুষ আছেন যাঁরা সব জেনেও ভুলভাল রটাচ্ছেন, কেউ কেউ বদমাইশি করে এগুলো করছেন।” নাম না করে এদিন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় আক্রমণ করেছেন অভিষেককেও।

বলেন, “ওই তালপাতার সেপাইকে সেনাপতি বলেন অনেকে। হঠাৎ করে তিনি বলে দিলেন আইনের বাধা থাকার জন্য শাহজাহানকে গ্রেপ্তার করা যাচ্ছে না। উনি আইনের কিছু বোঝেন? পেটে দুটো বোম মারলে আইন বেরিয়ে চলে আসবে। অনেকের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করেছেন উনি। বিজেপি যদি আমাকে ওঁর বিরুদ্ধে লড়তে বলে আমি অবশ্যই লড়ব। ভয়ে পালিয়ে যাব নাকি? আমি দেখিয়ে দেব তাঁর দুর্বৃত্ত দলকে কীভাবে মোকাবিলা করতে হয়। ডায়মন্ডহারবারে তাঁর একটা পরিষ্কার দুর্বৃত্ত দল আছে। তাঁকে লক্ষ লক্ষ ভোটে হারাব।” প্রাক্তন বিচারপতি মুখ খোলেন সন্দেশখালি নিয়েও। বলেন, “সন্দেশখালির মহিলারা যেভাবে রুখে দাঁড়িয়েছেন তা অনেকের কাছেই উদাহরণ হয়ে উঠবে। আমি বলব যেখানে এই ধরনের ঘটনা দেখবেন লাঠি, ঝাঁটা হাতে নিয়ে বিক্ষোভ করুন। রাজ্য পুলিশ, কলকাতা পুলিশ অত্যন্ত দক্ষ। কিন্তু রাজনীতি জড়িয়ে থাকার কারণে তাঁদের ঠিক মত কাজ করতে দেওয়া হয়নি। নাহলে, আরও আগে গ্রেপ্তার করা যেত শাহজাহানকে। আমি সন্দেশখালি যাব কিছুদিনের মধ্যেই।” তবে এখনও অফিশিয়ালি বিজেপিতে যোগ দেননি প্রাক্তন বিচারপতি সেটাও জানিয়ে রাখলেন। তাঁর বক্তব্য, যোগদান করার পর পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করবেন।

তবে মমতার উদ্দেশে বিচারপতির সংযোজন, “অনেকবার তাঁকে চুল ধরে টেনে বার করে দেওয়া হয়েছে। বাংলার নারী সমাজ গর্জে উঠেছিল ভোটের বাক্সে। তাঁরা গর্জন করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই হেনস্থা দেখে। আর সরল যেটা বলছি, তিনি তাঁর ব্যক্তিগত জীবনে অত্যন্ত সরল। আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে খুব শ্রদ্ধা করি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আমি তো কখনও আক্রমণ করি না।”

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*