আরামবাগে মিতালী বাগের সমর্থনে জোর সওয়াল মমতার, মঞ্চে জায়গা পেলেন না অপরূপা

রোজদিন ডেস্ক :- আগামী ২০ মে আরামবাগে পঞ্চম দফায় ভোট। এই বছর লোকসভা ভোটে আরামবাগে তৃণমূলের প্রার্থী নির্বাচন থেকেই দলের ভিতরে নানা ভাবে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের খবর সামনে আসে। এই পরিস্থিতিতে বুধবার দলের উদ্দেশ্যে ক এক্সড়া বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বুধবার আরামবাগে নির্বাচনী প্রচারে যান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আরামবাগের কালীপুর মাঠে সভা ছিল মমতার। সেখান থেকেই দলীয় কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আমাদের কেউ বদমায়েশি করলে আমি থাপ্পড় মেরে তাড়িয়ে দিতে পারি।“ সঙ্গে বিজেপি বা সিপিএমের দলে যে এই অনুশাসন নেই তাও মমতা তার বক্তব্যে বুঝিয়ে দেন।
সূত্রের খবর, প্রার্থী মিতালির প্রচারে গতবারের সাংসদ অপরূপা পোদ্দারকে এক দিনও দেখা যায়নি। অপরূপার দাবি, প্রার্থী কিংবা দলের জেলা নেতৃত্ব অথবা নির্বাচন কমিটি কোনও তরফেই তাঁকে প্রচারে ডাকা হয়নি। যদিও টিকিট না পেয়ে সংবাদমাধ্যমের সামনে একাধিকবার অপরূপাকে ক্ষোভ উগড়ে দিতে দেখা গিয়েছিল।

এবার তৃণমূলের সভামঞ্চে খোদ বিদায়ী সাংসদকেই উঠতে না দেওয়ার অভিযোগ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে। আগে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্য়ায় মঞ্চে বক্তব্য রেখেছিলেন। সেই সময় দেখা যায় বিদায়ী সাংসদ অপরূপা পোদ্দার মঞ্চের পিছনে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। কিন্তু মঞ্চে উঠছিলেন না। কেন তিনি মঞ্চে উঠছেন না, সেই বিষয়ে প্রশ্ন করতেই কার্যত ফুঁসে উঠলেন আরামবাগের বিদায়ী তৃণমূল সাংসদ। সরাসরি নাম ধরে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন। অপরূপা বলেন, “সব তো ক্যামেরাবন্দি হয়েছে। কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় মঞ্চে উঠতে দেননি। তিনি তফসিলি, দলিত, সংখ্যালঘুদের বিপক্ষে। আমি এখনও দলের দু’বারের সাংসদ।”

এদিন অপরূপার বিস্ফোরক অভিযোগ শুনে পাল্টা জবাব দিয়েছেন শ্রীরামপুরের তৃণমূল প্রার্থীও। কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য বক্তব্য, “ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকেই এসব বলছেন অপরূপা।”
তিনি আরও বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তারক্ষী একজন এসে অরূপ বিশ্বাসকে জিজ্ঞেস করল, উনি এসেছেন… তাঁকে অনুমতি দেওয়া হবে কি না। অরূপ বিশ্বাস তো কার সঙ্গে কথা বলে বললেন, না উনি আসতে পারবেন না। আমার এতে কী আসে যায়! আমার উপর ওঁদের ব্যক্তিগত আক্রোশ আছে, তাতে আমার কিছু করার নেই।”

এই পরিস্থিতিতে এদিন নির্বাচনী প্রচারে আরামবাগে যান মুখমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিনের সভায় তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য ছিল, “এর আগে কেউ ভুল করে থাকলে আমরা ভুল শুধরে নিয়েছি। এই কেন্দ্রে আমরা এ বার নতুন প্রার্থীকে টিকিট দিয়েছি। মিতালি প্রান্তিক ঘরের মেয়ে। ওঁকে জেতান।’’
লোকসভা নির্বাচনের প্রচার পর্বে একটানা বিজেপি, সিপিআইএম, কংগ্রেসকে আক্রমণ করেছেন তৃণমূল নেত্রী৷ কিন্তু হুগলির আরামবাগের সভায় গিয়ে বিরোধীদের নিশানা করার পাশাপাশি এদিন নিজের দলের নেতাদেরও সতর্ক বার্তা দিলেন তিনি। গত বিধানসভা নির্বাচনে আরামবাগ লোকসভার অন্তর্গত খানাকুল, পুরশুড়ার মতো আসনগুলি দখল করে নেয় বিজেপি৷ এবারের লোকসভা নির্বাচনে আরামবাগে প্রার্থীও বদল করেছে তৃণমূল৷ আর আত্মবিশ্বাসী মমতার কথায়, “মানুষই হারিয়েছে, মানুষই জেতাবে৷”
প্রার্থী মিতালি বাগকে কেন জেতানো উচিত তা নিয়েও বলেন মমতা। তাঁর কথায়, “মিতালি বাগদি সম্প্রদায়ের মেয়ে। উচ্চশিক্ষা করেছে। অনেকে বলেন, বাগদি বাউড়িরা টিকিট পান না। আমরা ওঁকে টিকিট দিয়ে তা প্রমাণ করে দিয়েছি। ও সারাজীবন বিয়ে করেনি, দলের কাজ করে।’’

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*