ভালোবাসি ভালোবাসি

পিয়ালি আচার্যঃ

প্রেমের সপ্তাহ শুরু হয়েছে – ‘কাছে-দূরে-জলে-স্থলে এখন ভালোবাসা’র বাঁশির শব্দ। প্রেমিক প্রেমিকা একে অপরকে বলছে ‘ভালোবাসি ভালোবাসি’। রাত পোহালেই ১৪ই ফেব্রুয়ারি, ভ্যালেনটাইনস ডে। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে এ বছর এ দিন শিবরাত্র। ভারতীয় নারীরা শিবের মত স্বামী পাওয়ার আকাঙ্খায় শিব-রাত্রি পালন করেন। শিব পার্বতীর অর্ধনারীশ্বর মূর্তি যেমন পুরুষ ও প্রকৃতির মিলনের কথা বলে তেমনি শিব হলো বিশ্বেশ (বিশ্ব+ঈশ) অর্থাৎ ত্রিভুবনে শাসক রূপে পুজিত হন। তাই কখনও তিনি নীলকন্ঠ হিসাবে সব বিষ নিজের গলায় ধারণ করে রক্ষাকর্তা হন, কখনও বা নিজের জটাতে গঙ্গাকে ধারণ করে ত্রিভুবনকে বাঁচান। তাই দেবাদিদেবকে কেউ পিতা, কেউ স্বামী, কেউ প্রেমিক হিসাবে পুজো করেন। তবে বেশিরভাগ মানুষই অল্পে তুষ্ট স্বল্পে খুশি শিবকে ত্রাণকর্তা হিসাবে পুজো করেন।
সেইরকম ভ্যালেনটাইনস ডে-তে শুধু কোনো প্রেমিক প্রেমিকাকে গোলাপ দেয় তা নয়, বাবা-মা তাঁর সন্তানকে গোলাপ দেয় অথবা কোন বন্ধু তার বন্ধুকে গোলাপ দিয়ে বলে ‘আই লাভ ইউ’। আসলে ভালোবাসা কথাটাই অনেক বড়। বিভিন্ন গদ্য কবিতায় তার বিভিন্ন ব্যাখা। অনেকের মতে প্রত্যেক দিনই ভালোবাসার দিন। যেকোনো সম্পর্ক টিকে থাকে ভালোবাসার বন্ধনে। তাহলে আলাদা দিন কেন? আমাদের মতে কেনই বা আলাদা একটা দিন হবে না? আমরা যদি শিব রাত্রি, দুর্গাপুজা, দোলপূর্ণিমা, রাখিপূর্ণিমায় আলাদা করে শিব, দুর্গা বা রাধাকৃষ্ণের পুজো করি অথবা কালীপুজো বা দীপাবলিতে সারাবিশ্ব জুড়ে আলোর উৎসবে মেতে উঠি তাহলে ভালোবাসার জন্য একটি দিন বজায় থাকলে ক্ষতি কি! আর ভরা বসন্তে যদি নব পরিচয় হয় “কালিয়া বঁধুর সনে” তবে দুপক্ষই তো বলতে পারে ফুল ফুটুক না ফুটুক আজ বসন্ত।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*