দূর বিদেশ সিডনিতে দুর্গাপুজো

রাহুল ব্যানার্জি, সিডনি : শরতের ঝলমলে আকাশ, পেঁজা তুলো মেঘ, কাশের দোলায় শিউলি সকালে হয়তো আমাদের ঘুম ভাঙে না। এখানে এখন শীত, বিদায়বেলায় শেষ কামড় দিয়ে তার অস্তিত্ব জানান দিচ্ছে। হ্যাঁ, এই লেখা লিখছি অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে বসে। দক্ষিণ গোলার্ধের দেশে আমার মতো বহু বাঙালি তথা ভারতীয়র বাস এখানে।

পেশার তাগিদে দেশ থেকে দূর-বিদেশ অস্ট্রেলিয়ায় এসেছিলাম আমরা। আমি-আমরা-আমাদের মতো অনেকেই। কেউ বা এখানকার স্থায়ী বাসিন্দা-নাগরিক, কেউ বা কর্মসূত্রে এখানে বসবাস করেন। যে যেভাবেই থাকি না কেন, বাঙালি যখন, দুর্গাপুজো করব না, তা হয় নাকি। হ্যাঁ, কলকাতার মতো সিডনির বাঙালিরাও সারা বছর ধরে প্রতিক্ষায় থাকেন এই জগৎজননীর পুজোর জন্য। জাতি-ধর্ম-বর্ণ মিলেমিশে একাকার হয়ে যায় এই মিলনমেলায়।

২২ সেপ্টেম্বর সন্ধায় আনন্দমেলা দিয়ে সিডনির বেঙ্গলি অ্যাসোসিয়েশন আনন্দময়ীর আগমনের সূচনা করে। ২৩ সেপ্টেম্বর পুজো শুরু হয় সকাল ১১টায়। অঞ্জলি চলে দুপুর ১২.৩০ থেকে ১.৩০ পর্যন্ত। তারপর প্রসাদ ও ভোগ বিতরণ হয়। আপনারা হয়ত ভাবছেন, তিথি মতো পুজো তো শুরুই হলো না। অঞ্জলিই বা কিসের, ভোগ-প্রসাদই বা কিসের? হ্যাঁ, এটাই এখানে বাস্তব। বিপরীত গোলার্ধের একটা দেশে দিনক্ষণ, তিথি, নক্ষত্র মেপে হয়তো পুজো হয় না—বলা ভালো করা যায় না। কিন্তু ভক্তিতে বা নিষ্ঠায় কোনওরকম খামতি নেই এখানকার মানুষজনের। উইকডেজ-এ প্রচণ্ড কর্মব্যস্ততা, তাই উইকএন্ডে ছুটির দিনে মা-কে একমনে আবাহন—বিদায়-বরণও এই দু-দিনের মধ্যে। সিডনির বেঙ্গলি অ্যাসোসিয়েশন সংক্ষেপে ডিএএনএসডব্লিউ-এর তরফ থেকে আমরা ২২ সেপ্টেম্বর পুজো শুরু করি। পুজো শেষ হয় ২৪ সেপ্টেম্বর সন্ধায়। ২৪ তারিখও নিষ্ঠাভরে মায়ের পুজো, অঞ্জলি, ভোগ-প্রসাদ বিতরণ হয়।

এরপর আসি মা-কে বিদায় দেওয়ার পালা। প্রচণ্ড কর্মব্যস্ততার মাঝে দুর্গামাকে ঘিরে আড়াই দিনের আনন্দ উৎসবের সমাপ্তি। উপস্থিত মহিলারা হরষে-বিষাদে মাকে বরণ করেন। মেতে ওঠেন সিঁদুরখেলায়। ধুনুচি নাচে মাতোয়ারা হই ছোটো-বড়ো আমরা সবাই। আর বিদায়বেলায় অস্ফুটে একটাই কথা বলি, আসছে বছর আবার এসো মা। ছবি- প্রতিবেদক

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*