২৭ বছর আগে আজকের দিনেই সচিনের টেস্ট অভিষেক

রাজকুমার ঘোষঃ আজকের তারিখ, ১৫ই নভেম্বর, হ্যাঁ ঠিক ২৭ বছর আগে একই দিনের ভারতের ক্রিকেট ইতিহাসের শ্রেষ্ঠ খেলোয়াড় সচিন তেন্ডুলকরের টেস্ট অভিষেক হয়েছিল। কৃষ্ণমাচারি শ্রীকান্তের নেতৃত্বে সচিন প্রথমবার ভারতীয় দলের সাথে ‘বিষ্ময় বালক’ হিসাবে পাকিস্তানে পূর্ণাঙ্গ সিরিজ খেলতে গিয়েছিল। ১৯৮৯ সালের ১৫ই নভেম্বর ভারত করাচিতে পাকিস্তানের সাথে সিরিজের প্রথম টেস্ট খেলতে নেমেছিল। সেই ম্যাচেই বিষ্ময় বালকের অভিষেক হয়েছিল। আপামর ভারতবাসী উৎকন্ঠা নিয়েছিল, পাকিস্তানের বিশ্বত্রাস ফাস্ট বোলার ইমরান খান, ওয়াসিম আক্রম এবং ওয়াকার ইউনিসকে কিভাবে সামলাবে এই ১৬ বছর বয়সী এই বাচ্চা ছেলেটি। সেই সময় লাইভ ম্যাচ দেখার সুযোগ একমাত্র দূরদর্শনই দিতো। কিন্তু ভারতে সেই সময় রাজনীতির ডামাডোল চরমে। ভোটাভুটি নিয়ে সারা দেশ ব্যস্ত। ভিপি সং সেই সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন। দূরদর্শন তাই ব্যস্ত ছিল এই টেলিকাস্ট নিয়ে, যার ফলে আপামর ভারতের ক্রিকেটপ্রেমীদের সচিন তেন্ডুলকরের অভিষেক ম্যাচ সরাসরি দেখার সুযোগ হয়ে ওঠেনি। রেডিওর ওপর ভরসা রাখতে হয়েছিল।

করাচির সেই ম্যাচের প্রথম দিন পাকিস্তান প্রথমে ব্যাট করে। প্রথম ইনিংসে তারা ৪০৯ রান করে। কপিল দেব ৪ উইকেট দখল করেন। জবাবে ভারত প্রথম ইনিংসের শুরুতেই একের পর এক উইকেট হারাতে থাকে। ম্যাচের দ্বিতীয় দিন ভারত যখন ৪ উইকেটে ৪১ রানে ধুঁকছে, তখনই মাঠে নামেন ভারতের সেই সময়ের বিষ্ময় বালক সচিন তেন্ডুলকর। সামনে বল করেছেন ওয়াকার ইউনিস। সেই সময় বিশ্বের দ্রুততম বোলার ছিলেন এই ওয়াকারই। তার এক একটা বল যেন আগুনের গোলা। প্রথমেই বাউন্সার দিয়ে সেই ঝাঁঝ বুঝিয়ে দিয়েছিলেন সচিনকে। সচিন বেশি রান করতে পারেননি, কিন্তু তার করা ১৫ রানের মধ্যে দুটি বাউন্ডারি ছিল, যা তিনি ওয়াকার ইউনিসের বলেই মেরেছিলেন, বুঝিয়েছিলেন তিনি আগামী দিনের জিনিয়াস। আর এখন সচিন তেন্ডুলকর তো একজন ইতিহাস। যাকে বলে ভারতীয় ক্রিকেটের একটা বড় ইতিহাস। ভারত ইনিংসে বেশি রান করতে পারেনি, টেল এন্ডাররা, বিশেষ করে কপিল দেব দারুন ব্যাট করে ভারতকে ফলো অন থেকে বাঁচিয়েছিলেন। এরপর সচিন তেন্ডুলকর দ্বিতীয় ইনিংসে আর ব্যাট করার সুযোগ পাননি। আর ভারতও সেই ম্যাচ হারেনি, করাচির সেই ম্যাচ অমিমাংসিত ভাবে শেষ হয়েছিল।

১৯৮৯ সালের ১৫ই নভেম্বরে শুরু হওয়া সেই টেস্টের সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ

পাকিস্তান প্রথম ইনিংসেঃ ৪০৯ (শোয়েব মোহাম্মদ ৬৭, জাভেদ মিয়াঁদাদ ৭৮, ইমরান খান ১০৯*, কপিল দেব  ৪ উইকেটে ৬৯, মনোজ প্রভাকর ৫ উইকেটে ১০৪ এবং দ্বিতীয় ইনিংসেঃ ৫ উইকেটে ৩০৫ রান ডিঃ (শোয়েব মোহাম্মদ ৯৫, সলিম মালিক ১০২*, কপিল দেব ৩ উইকেটে ৮২), ভারত প্রথম ইনিংসেঃ ২৬২ (কাপিল দেব ৫৫, কিরণ মোরে ৫৮*), ওয়াসিম আকরাম ৪ উইকেটে ৮৩, ওয়াকার ইউনুস ৪ উইকেটে ৮০) এবং দ্বিতীয় ইনিংসেঃ ৩ উইকেটে ৩০৩ রান (সিধু ৮৫, সঞ্জয় মাঞ্জরেকার ১১৩*)

ম্যান অব দ্য ম্যাচঃ কপিল দেব

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*