পুজোতে দেদার পেটপুজো

নীলেন্দু শেখর ত্রিপাঠী : বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসবের কাউন্টডাউন শুরু হয়ে গেছে। সারা বছর ধরে এই চার দিনের প্রহর গুনি আমরা। বাচ্চাদের নতুন জামাকাপড় পরে প্যাণ্ডেলে প্যাণ্ডেলে ঠাকুর দেখা, বাড়ির ছেলেরা সারা বছর কর্মব্যস্ততা ভুলে গিয়ে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা, পরিবারের সঙ্গে সময় দেওয়া, তবে সব থেকে হাসি ফোটে বাড়ির মহিলাদের মুখে। কারণ, এই কটা দিন হেঁসেল থেকে মুক্তি। খাওয়া-দাওয়া সবাই বাইরেই সারতে চান। দুর্গাপুজোর সঙ্গে পেটপুজো অবধারিতভাবে চলে আসেই। সারা বছর যতই চাইনিজ ও মোগলাই খানা খাক না কেন, খাদ্যরসিক বাঙালি পুজোর এই কটা দিন নিখাদ বাঙালি খাবারে মেতে থাকতে চায়। কিন্তু পরিকল্পনা করলেই তো হয় না। কোথায় খাবেন, কি খাবেন, পকেটের দিকটাও ভাবতে হবে। তাই আপনাদের মুশকিল আসানে রোজদিন কলকাতার সেরা তিনটি বাঙালি রেস্তোরাঁর পুজোর মেনু নিয়ে হাজির। দেখে নিন কবে কোথায় যাবেন এবং কি খাবেন—

বালিগঞ্জ প্লেস

এই বিখ্যাত বাঙালি রেস্তোরাঁটির দুটি শাখা আছে। একটি বালিগঞ্জে, অপরটি সল্টলেকে। সারা বছর এই রেস্তোরাঁতে লাঞ্চ বুফে থাকে, যদিও পুজোর সময় একটু অন্যভাবে সেজে ওঠে এই রেস্তোরাঁ। সপ্তমী থেকে বিজয়া দশমী এই চার দিনই লাঞ্চ ও ডিনার বুফে থাকছে। দেখে নেওয়া যাক কি কি থাকছে—

সপ্তমীর দিন গন্ধরাজ ঘোল, মোহনপুরি, রাইস, রাজনন্দিনী পোলাও, নবরত্ন ডাল, পুরভরা কাকরোল ভাজা, আম কাসুন্দি আলুর দম, পটল পোস্ত, তপসে মাছ ভাজা, ভেটকি পালং পাতুরি, নারকেল সরষে ভাপা চিংড়ি, মুরগির কাবাব নসি, মাংসর এগডালিয়া, আনারস-খেজুরের চাটনি, পাপড়, মিষ্টি দই, মিহিদানা, কমলাভোগ, চিত্রকুট।

অষ্টমীর দিন লুচি, রাইস, সবজি মরিচ পোলাও, মটরশুঁটি দিয়ে মুগডাল, পটলভাজা, ভাজা মশলা আলুর দম, ফিস ফ্রাই উইথ কাসুন্দি, কলাপাতা ভাপা পমফ্রেট, চিংড়ি মালাইকারি, দম মুরগি, ভুনা মাংস, আনারস-খেজুর আমসত্ত চাটনি, পাপড়, মিষ্টি দই, রাজভোগ, চিত্রকুট, চকলেট সন্দেশ।

নবমী ও দশমীতে পাবেন— গন্ধরাজ ঘোল, কড়াইশুঁটির কচুরি, রাইস, নবরত্ন পোলাও, পঞ্চরত্ন ডাল, বেগুন/আলু ভাজা, মটরশুঁটির আলুর দম, পটলের দরমা, ফিস রোল উইথ কাসুন্দি, চিতল মাছের মুইঠা, ভুনা চিংড়ি, অম্লমধুর মুরগি, কষা মাংস, আনারস-খেজুর আমসত্ত চাটনি, পাপড়, মিষ্টি দই, মালপোয়া, কমলাভোগ, বাটারস্কচ আইসক্রিম, পান।

আমিষ বুফে ১০৫০ টাকা ও জিএসটি, নিরামিষ বুফে ৮৫০ টাকা ও জিএসটি।

 

ভজহরি মান্না

এই রেস্তোরাঁর কথা তো আপনারা সবাই জানেন। এদের বেশ কয়েকটি শাখা আছে। একডালিয়া, হিন্দুস্থান রোড, সল্টলেক, কসবা, হাতিবাগান, নাগেরবাজার—সপ্তমি থেকে বিজয়া দশমী এখানে বিশেষ থালি নিয়ে এসেছেন আপনাদের জন্য। দেখে নেওয়া যাক কি কি থাকছে—

মহাসপ্তমীতে নিরামিষ ‘হৈমবতী থালা’-য় থাকছে রাইস, ভাজা মুগ ডাল, আলু ভাজা, মোচার ঘণ্ট, ভেজিটেবিল পোলাও, পনির কড়াইশুঁটি, আনারসের চাটনি, মিষ্টি দই, রাজভোগ, মিষ্টি পান।

আমিষ— রাইস, ভাজা মুগ ডাল, মোচার ঘণ্ট, পাবদা সরষে, বাগদা চিংড়ি বেঙ্গলি রোস্ট, ভেজিটেবিল পোলাও, কষা মাংস, আনারসের চাটনি, মিষ্টি দই, রাজভোগ, মিষ্টি পান।

অষ্টমীর দিন ‘দক্ষসূতা থালা’-তে (নিরামিষ) থাকছে রাইস, শুক্তো, সোনা মুগ ডাল, আলু ভাজা, বেঙ্গলি পোলাও, চানা কড়াইশুঁটির কর্মা, খেজুর আমসত্ত চাটনি, আম দই, ক্ষীরকদম, মিষ্টি পান।

আমিষ-এ থাকছে রাইস, শুক্তো, কড়াইশুঁটি দিয়ে সোনা মুগ ডাল, বাগদা চিংড়ি মালাইকারি, ইলিশ বরিশালী, বেঙ্গলি পোলাও, দই মাংস, খেজুর আমসত্ত চাটনি, আম দই, ক্ষীরকদম, মিষ্টি পান।

নবমীর দিন ‘চন্দ্রিকা থালা’-তে (নিরামিষ) থাকছে রাইস, ছোলার ডাল, বেগুন ভাজা, ঢোকার ডালনা, বেঙ্গলি পোলাও, ফুলকপি কর্মা, আমের চাটনি, রাবড়ি, পান্তুয়া, মিষ্টি পান।

আমিষ-এ থাকছে রাইস, ছোলার ডাল, ফুলকপি কর্মা, গলদা চিংড়ি মালাইকারি, ইলিশ বরিশালী, বেঙ্গলি পোলাও, মটন ডাকবাংলা, আমের চাটনি, রাবড়ি, পান্তুয়া, মিষ্টি পান।

বিজয়া দশমীর দিন ‘দেবদত্তা থালা’-তে (নিরামিষ) থাকছে রাইস, ভাজা মুগ ডাল, পোস্তর বড়া, চানার ডালনা, বেঙ্গলি পোলাও, আলু ফুলকপি কড়াইশুঁটির তরকারি, খেজুর-টমেটোর চাটনি, মিষ্টি দই, সন্দেশ, মিষ্টি পান।

আমিষ-এ থাকছে রাইস, ভাজা মুগ ডাল, ছানার ডালনা, ভেটকি কালিয়া, দই ইলিশ, কষা মাংস, খেজুর-টমেটোর চাটনি, মিষ্ট দই, সন্দেশ, মিষ্টি পান।

প্রত্যেক আমিষ থালা ৮০০ টাকা ও জিএসটি এবং প্রত্যেক নিরামিষ থালা ৫২৫ টাকা ও জিএসটি।

 

কস্তুরি

সম্প্রতিকালে এই বাঙালি রেস্তোরাঁ প্রবল জনপ্রিয়তা লাভ করেছে এদের খাদ্যতালিকার বৈচিত্র্যের জন্য। এদেরও বেশ কয়েকটি শাখা আছে—বালিগঞ্জ, হিন্দুস্থান রোড, ধর্মতলা। এখানে পুজোয় প্রত্যেকদিন চার রকমের থালি থাকছে। আসুন দেখে নেওয়া যাক—

প্রথম থালিতে (মূল্য ৮৯৯ টাকা) আম পান্না শরবত, রাইস, সোনা মুগ ডাল, ঝুরঝুরে আলু ভাজা, কচুপাতা দিয়ে চিংড়ি ভাপা, চিংড়ি মালাইকারি, সরষে ইলিশ ভাপা, বাসন্তী পোলাও, মটন কষা, চাটনি, পাপড়, মিষ্টি দই। অন্যান্য থালিতে ভেটকি, পাবদা সরষে, কাতলা কালিয়া রয়েছে। অন্যান্য থালির দাম— ২ ও ৩ নম্বর থালি ৭৪৯ টাকা, ৪ নম্বর থালি ৬৯৯ টাকা।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*