অনু গল্পঃ কর্ম সংস্কৃতি

দীপক আঢ্যঃ
বিতান রায় ইনসিওরেন্স কোম্পানির বড় অফিসার। গতকাল এজেন্ট মিটিং এ কী সুন্দর ভাষণ দিলেন কর্ম সংস্কৃতির উপর। ভাষণ শুনে রোহিত খুশি হল মনে মনে।
-আসব স্যার?
-হুঁ
-বলছিলাম যে…
‘এক মিনিট। ম্যাসেজটা পাঠিয়েই শুনছি।’ স্মার্ট ফোনে শব্দ সাজাতে সাজাতে বললেন বিতানবাবু।
প্রায় সাত-আট মিনিট পার হলে চোখা-চখি হল বিতানবাবু ও রোহিতের। একটা জেরক্স কপি এগিয়ে দিয়ে রোহিত বলল, ‘এটা যদি অ্যাটেস্টেড করে দিতেন তাহলে আজই পেপারস গুলো জমা দিতে পারতাম।’
-কিন্তু অরিজিনালটা কই?
-সেটা আনিনি বলেই তো…
-সরি। এটা একটা পেমেন্ট এর ব্যাপার। অরিজিনাল পেপারস না দেখে তো সাইন করতে পারবনা। আপনি এক কাজ করুন, আমিতো এখনও অনেকক্ষণ আছি। যদি আপনি পারেন তো অরিজিনালটা নিয়ে আসুন না।
-ঠিক আছে, অগত্যা।
প্রায় ঘণ্টা খানেক পরে বাড়ি থেকে অরিজিনাল ডকুমেন্টস নিয়ে বিতানবাবুর সামনে হাজির রোহিত। এবার বিতানবাবু অরিজিনাল পেপারস ভেরিফাই না করেই ঝটপট সাইন করতে করতে স্বগতোক্তি করলেন, ‘আজ ট্রেনটা ধরতে পারলে হয়।’
জমা দেওয়ার কাউন্টারে জমা দিতে গিয়ে আর এক বিপত্তি। ক্লার্ক কাউন্টারের ভিতর থেকে বললেন, ‘যে স্যার সই অ্যাটেস্টেড করেছেন তার সিল কই? এগুলো জমা নিলে যে আবার রিটার্ন আসবে।’
দ্রুত উপর তলায় ছুটে যায় রোহিত। তাকিয়ে দেখে বিতানবাবুর চেয়ার ফাঁকা। ঘড়ির লম্বা কাঁটা শ্লথ গতিতে পার হওয়ার চেষ্টা করছে সাড়ে তিনটের ঘর। গতকালের ভাষণে বহুল উচ্চারিত কর্ম সংস্কৃতি শব্দটি চব্বিশ ঘন্টা কাটতে না কাটতেই বড্ড বেশি ব্যাঙ্গ করছে বলে মনে হল রোহিতের।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*