আজ মহাসমারোহে পালিত হয়েছে কল্পতরু উৎসব

আজ নতুন বছরের প্রথম দিন; কল্পতরু উৎসব। সকাল থেকে উপচে পড়া ভীড় দক্ষিনেশ্বর কালিবাড়ি, কাশীপুর উদ্যানবাটি ও কামারপুকুরে। সকলের মঙ্গলময় জীবনের কামনা করতেই এই উৎসব। ভোর থেকে ভিড় জমতে শুরু করছে সর্বত্র। বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসছেন ভক্তরা। সকাল থেকেই মঙ্গলারতি, কীর্তন ও ভজন, বৈদিক মন্ত্রোচ্চারণ, বিশেষ পুজো ও হোমের আয়োজন ছিল কাশীপুর উদ্যানবাটিতে। অন্যদিকে দক্ষিণেশ্বর মন্দিরে এদিন রেকর্ড ভিড় হয়। যেদিকে দু চোখ যায়, শুধুই কালো মাথার সারি। দুপুরে ভিড় বালি ব্রিজ ছাড়িয়ে যায়। অন্যদিকে আদ্যাপীঠের আর্মি ক্যাম্প ছাড়িয়ে যায় ভক্তদের লাইন।
প্রসঙ্গত, ১৮৮৬ সালের ১ জানুয়ারি এই উৎসব শুরু হয়েছিল। এই দিন রামকৃষ্ণ পরমহংস তাঁর অনুগামীদের কাছে নিজেকে ঈশ্বরের অবতার বলে ঘোষণা করেছিলেন। দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পর এই দিনে রামকৃষ্ণ পরমহংস একটু সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন।
রামকৃষ্ণ পরমহংসের অনুগামীরা এই উৎসবকে “ঠাকুরের বিশেষ উৎসব”গুলির অন্যতম উৎসব বলে থাকেন। তখন তিনি তাঁর অনুগামী নাট্যকার গিরিশচন্দ্র ঘোষকে জিজ্ঞাসা করেন, “তোমার কি মনে হয়, আমি কে?” গিরিশচন্দ্র বলেন, তিনি বিশ্বাস করেন যে রামকৃষ্ণ পরমহংস “মানবকল্যাণের জন্য মর্ত্যে অবতীর্ণ ঈশ্বরের অবতার।” রামকৃষ্ণ পরমহংস বলে, “আমি আর কি বলব? তোমাদের চৈতন্য হোক।” এরপর তিনি সমাধিস্থ হয়ে তাঁর প্রত্যেক শিষ্যকে স্পর্শ করেন। তাঁর অনুগামীদের মতে, তাঁর স্পর্শে সেদিন প্রত্যেকের অদ্ভুত কিছু আধ্যাত্মিক অনুভূতি হয়েছিল।
রামকৃষ্ণ পরমহংসের অন্যতম শিষ্য রামচন্দ্র দত্ত ব্যাখ্যা করে বলেছিলেন, সেই দিন রামকৃষ্ণ পরমহংস হিন্দু পুরাণে বর্ণিত কল্পতরুতে পরিণত হয়েছিলেন এবং এই দিনটিকে কল্পতরু দিবস নাম দিয়েছিলেন, যা পরে কল্পতরু উৎসব নামে পরিণত হয়েছিল।

জমজমাট এই উৎসবকে ঘিরে ব্যবস্থা করা হয়েছে কড়া নিরাপত্তার।

চিত্রগ্রাহকঃ প্রশান্ত দাস

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*