‘জয়’ শ্রীরাম

২০১৪ সালের ২৬ মে নরেন্দ্র মোদী শপথ নেন। বিজেপি একাই সংখ্যাগরিষ্ঠ। তখনই বোঝা গিয়েছিল বিজেপি আস্তে আস্তে লোকসভা ও রাজ্যসভায় দুই তৃতীয়াংশ সদস্য তৈরি করবে ৭-৮ বছরের মধ্যে। তারপর সংবিধানের প্রস্তাবনা থেকে ধর্মনিরপেক্ষ, সমাজতান্ত্রিক এবং গণতান্ত্রিক এই বিশেষণ তিনটি তুলে দেবে। আর সবাইকে বলবে, হিন্দু ধর্ম চর্চা করো। মুসলিমদের ‘ভারতীয়’ হতে হবে। মানে মুসলিমদের নিজেদের ধর্ম চর্চা কম করে সংখ্যাগুরুর ধর্ম চর্চায় বাহবা দিতে হবে। মহরমে অস্ত্র বার করা যাবে না। কিন্তু রামনবমীর মিছিলে অস্ত্রের ঝনঝনানি মুসলিমদেরও সহ্য করতে হবে। অযোধ্যার ওই বিবাদিত জায়গায় বিরাট রামমন্দির হবে। হর হর মহাদেব আর জয় শ্রীরাম বলে রোজ সবাইকে জপ করতে হবে। এই অবধি জানা ছিল। কিন্তু এটা জানা ছিল না যে, বিজেপি সভাপতির ছেলে ব্যবসা করে এক বছরে মুনাফা ১৬ হাজার শতাংশ বৃদ্ধি করে নেবে। ব্যবসায়িক বুদ্ধি ভালো, তার তারিফ করতেই হয়। কিন্তু এই উল্কার মতন শ্রীবৃদ্ধি দেখলে অবাক হতে হয়। কেউ যদি বলেন, অমিতজির পুত্র জয় শাহ-র কোম্পানির লেনদেন সবটাই চেকে হয়েছে, তাহলেই সেটা স্বচ্ছ এটা মানা কষ্টকর। এটা মানলে বুঝতে হবে, ওরা সবাইকে বোকা ভাবছেন। কেন্দ্রে এবং রাজ্যে অমিতজির পার্টি নিরঙ্কুশ ক্ষমতায়। তার ফলেই অমিতস্য পুত্র জয়ের ব্যবসার এই রমরমা হয়েছে। অর্ডার পাওয়া এবং পেমেন্ট পাওয়া সব ব্যাপারেই কোম্পানিগুলো দ্রুত কাজ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার ও গুজরাট সরকারের সুনজরে থাকার জন্য। জয়ের যতটা ব্যবসা হয়েছে, দু-দিন পরে দেখা যাবে, যাঁরা তাকে ব্যবসায়িক সুবিধা দিয়েছেন, তাঁদের দ্বিগুণ লাভ হবে। ধর্ম-কর্ম করা পার্টির সভাপতির ছেলে এমন অধর্ম করলে ভগবান শ্রীরাম কতটা তাঁদের দেখবেন, এটা নিয়ে সন্দেহ আছে। কারণ, ২০১৯ সালে ভোটার ভগবানরা কিন্তু সচেতন হচ্ছেন। তাঁরা জয় শ্রীরাম-এর স্লোগানকে ‘জয়’ শ্রীরাম দেখবেন।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*