মিনি সমুদ্র গাদিয়াড়ায় উইক এন্ড

যে কোনও সপ্তাহের শেষে ফোর্ট মর্নিংটন অর্থাৎ ক্লাইভের দুর্গে চলুন। তবে দুর্গটি পরিত্যক্ত হয় উত্তরকালে, আর বিধ্বস্ত হয় ১৯৪২ সালের ভয়াবহ বন্যায়। ভাটার কালে ট্যুরিস্ট লজের সামনে ধ্বংসস্তূপ আজও দেখে নেওয়া যায়। কলকাতার কাছাকাছি হাওড়া জেলার হুগলী নদীর তীরে মনোরম পর্যটন কেন্দ্র গাদিয়াড়া। গঙ্গা অর্থাৎ হুগলী নদীর ব্যাপ্তি যথেষ্ট গাদিয়াড়ায়। রূপনারায়ণ নদও এসে মিলেছে হুগলী নদীতে। কাছেই গড়চুমুকে দামোদরেরও মিলন ঘটেছে হুগলী নদীতে। সাগরমুখী বাঁকও নিয়েছে হুগলী নদী গাদিয়াড়ায়। দিগন্ত বিস্তৃত জলরাশি যেন সমুদ্রের রূপ নিয়েছে। বৈচিত্রের অভাব ঘটলেও স্নিগ্ধ গাদিয়াড়ার প্রকৃতি খুবই সুন্দর। এখানকার নির্মল বাতাস আপনার মন ছুঁয়ে যাবেই।

গ্রাম্য সরলতা আজও মেলে স্থানীয়দের কথাবার্তা, চলাফেরা ও কথা বার্তায়। দিনভর ভটভটি চলে অথৈ জলে। লঞ্চও চলে এখানে। আজ চলছে দেশ-দেশান্তর থেকে আসা বহু জাহাজ। অদূরেই রূপনারায়ণে সৃষ্ট মায়াচর। নৌকায় বেড়িয়ে নেওয়া যায়। তেমনই ঘুরে আসা যায় লজের বাঁদিকের লাইট হাউসটিতে। গাদিয়াড়ার সূর্যাস্ত দেখলে মন ভরে যায়। আরও সুন্দর গাদিয়াড়া থেকে ফেরি লঞ্চে নুরপুর গিয়ে নুরপুর থেকে আবার লঞ্চে গেঁওখালি পৌঁছে আবার গাদিয়াড়ায় ফেরা। নিয়মিত লঞ্চ চলছে হাওড়া, দক্ষিন চব্বিশ পরগনা ও পশ্চিম মেদিনীপুরের দিকে। ঘন্টা দুয়েকে সেরে নেওয়া যায় এই মনোমুগ্ধকর জলবিহার।

কীভাবে যাবেন?

গাদিয়াড়ায়, হাওড়া স্টেশন থেকে প্রচুর প্রাইভেট বাস যাচ্ছে। সকাল ৬টায় ছেড়ে রাত ৭টা ৪০ মিনিটে শেষ বাস। ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে বাগনানে ফ্লাইওভার ক্রসিং পেরিয়ে শ্যামপুর হয়ে বাস পৌঁছচ্ছে গাদিয়াড়ায়। ২০ মিনিট অন্তর বাস মেলে। যেতে মোট সময় লাগে প্রায় সাড়ে ৩ ঘন্টার মতো। হাওড়ায় ফেরে ৩টে ৪০ এ প্রথম ছেড়ে সন্ধ্যে ৬টায় শেষ বাস ছাড়ে গাদিয়াড়া থেকে। এছাড়া মেলে সিটিসির বাসও।

ধর্মতলা থেকে উলুবেড়িয়া হয়ে গড়চুমুক ছুঁয়ে সিএসটিসি বাসও যাচ্ছে গাদিয়াড়ায়। এছাড়া ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত হাওড়া-খড়গপুর শাখার ট্রেনে ৪৬ কিলোমিটার দুরের বাগনানে পৌঁছে যাওয়া যায়। আবার কলকাতার শহীদ মিনার থেকে সিএসটিসি বাসে সড়িযা হয়ে ৫২ কিলোমিটার দুরের নুরপুর পৌঁছেও ফেরি লঞ্চে চলে যাওয়া যায় গাদিয়াড়ায়। সময় লাগে মাত্র ১০ মিনিট।

কোথায় থাকবেন?

থাকারও অনেক ব্যবস্থা আছে গাদিয়াড়ায়। সঙ্গম পাড়ে মান্না, মন্ডল, মল্লিকদের বিশালক্ষী রাইস মিলে ডব্লুবিটিডিসির ৩২ ঘরের রূপনারায়ণ ট্যুরিস্ট লজ। আছে আইরিশ রিসর্ট, হোটেল সিবার্ড ইন্টারন্যাশনাল, রিসর্ট পানিতীর্থ, গঙ্গা কুটীর, হোটেল স্বপ্ননীড়, নিরালা লজের মতো বহু হোটেল আছে এখানে।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*