সেলিব্রিটি রোবটরা

তপন মল্লিক চৌধুরী

দেখতে মানুষের মতো, কিন্তু যন্ত্র। রোবট—কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ। মানুষের অনেক কাজই করে দেয়। কিছু রোবট আবার মানুষের মতোই কথাবার্তা বলে। বেশ কিছু রোবটের আছে যারা আবার সেলিব্রেটি। সোফিয়া নামের এক রোবটকে তো সৌদি আরব নাগরিকত্বই দিয়ে ফেলেছে। রোবট সোফিয়া ঢাকায় ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড আয়োজনেও অংশ নিয়েছে। কয়েকটি সেলিব্রেটি রোবটের কথা বলা হলএখানে।

গত বছরের অক্টোবরে সৌদি আরবের নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি পায় রোবট সোফিয়া। হংকংয়ের হ্যানসন রোবটিকসের ডেভিড হ্যানসনের হাতেই বিকাশ ঘটেছে সোফিয়ার। মানুষের অনেক বৈশিষ্ট্যের দেখা মেলে এই রোবটের মধ্যে। কৌতুক করা, হাসাহাসি করা আর অন্যকে বুঝতে পারার মতো মানবিক বিষয়গুলো সম্পর্কে সোফিয়া মনে হয় যথেষ্ট ওয়াকিবহাল। সোফিয়াকে দেখতে অড্রে হেপবার্নের মতো ।

সেই ২০০০ সালের দিকে প্রথম পৃথিবীর মুখ দেখে আসিমো। জাপানের মোটরগাড়ি নির্মাতা হোন্ডা তৈরি করে আসিমোকে। আসিমোকে ১২ থেকে ১৫ বছরের কিশোরের সঙ্গে তুলনা করা যেতে পারে। দৌড়াদৌড়ি আর লাফঝাঁপে ওস্তাদ আসিমো। সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা তার কাছেডালভাত। আসিমো হুবহু তার মনিবের আচরণ অনুকরণ করতে পারে। শুধু তা-ই নয় মানুষের চেহারা আর গলার আওয়াজও চিনতে পারে আসিমো।

বৃদ্ধদের বিছানা থেকে হুইলচেয়ারে বসাতে বেশ পটু জাপানিজ রোবট রোবিয়ার। জাপানি বিজ্ঞানী তোশিহারু মুকাই ভাল্লুকের মতো দেখতে এই রোবটটি তৈরি করেছেন। রোবটটি অসুস্থ রোগী থেকে শুরু করে বয়স্কদের পরিবহন করতে পারে।

চিয়ারলিডার রোবট

পৃথিবীর প্রথম চিয়ারলিডার রোবটের নাম মুরুতা। আগামী কয়েক দশকের মধ্যে নাকি নিয়মিত মাঠে দেখা যাবে মুরুতাকে। একটি বলের ওপর দাঁড়িয়ে নাচানাচি করতে পারে। সেন্সরের মাধ্যমে মাঠের পরিস্থিতি বুঝে আনন্দ করতে পারে মুরুতা।

নিনজা রোবট

 

সিনেমার নিনজারা যেভাবে দৌড়াদৌড়ি আর ঘোরাঘুরি করে রোবট অ্যাটলাস সে রকমই। বোস্টন ডায়নামিকস এই ৬ ফুট উচ্চতার মানবাকৃতির রোবট তৈরি করেছে। রোবটটি বন-জঙ্গলের মধ্য দিয়ে দৌড়াদৌড়ি করতে ভীষণ পারদর্শী।

অতিথি আমন্ত্রণে মিত্রা

কিছুদিন আগে ভারতের এক আন্তর্জাতিক উদ্যোক্তা সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কন্যা ইভাঙ্কা ট্রাম্পের সঙ্গে এক মঞ্চে দেখা যায় মিত্রাকে। সম্মেলন মঞ্চে ‘নমস্তে’ বলে সবাইকে আমন্ত্রণ জানায় মিত্রা। মিত্রাকে নরেন্দ্র মোদি আর ইভাঙ্কা ট্রাম্প নির্দেশ দিলে মিত্রা সম্মেলনের উদ্বোধন আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করে।

ফুটবলপাগল গুরু

গবেষকদের ধারণা, ২০৫০ সালের বিশ্বকাপ ফুটবলে মানুষকে রোবটরা হারিয়ে দেবে। সেই রোবট দলের নেতৃত্বে থাকবে গুরু নামের এক রোবট। দ্বিপদী এই রোবটটি এখন নিয়মিত বিভিন্ন ফুটবল খেলায় অংশ নিচ্ছে। ফুটবলের প্রায় সব কৌশলই এরই মধ্যে আয়ত্ত করে নিয়েছে গুরু। স্বনিয়ন্ত্রিত এই রোবটটি অস্ট্রেলিয়ার প্রকৌশলীরা তৈরি করছেন।

বাড়ি পাহারা দেয় কুরি

আপনি বাড়িতে একা থাকেন? কথা বলার কেউ নেই? এরকম অবস্থায় আপনাকে সঙ্গ দেবে রোবট কুরি। কুরির বুদ্ধিমত্তা নাকি অনেক রোবটের চেয়ে অনেক উন্নত। আপনার বাড়ির কোথায় কী আছে, কুরি তা সহজে মনে রাখতে পারে। শুধু তা-ই নয় বাড়িতে চোরের উৎপাত বন্ধ করতে কুরি বিশেষ ধরনের ফেসিয়াল রেকগনিশন ব্যবহার করে।

সুদর্শন টোপিও

ভিয়েতনামের রোবট টোপিওকে দেখলে প্রেমে পড়ে যেতে পারেন! সুদর্শন রোবট হিসেবে টোপিও রোবট দুনিয়ায় বেশ আলোচিত। দেখতে জেমস বন্ডের মতো টোপিও টেবিল টেনিস খেলায় যে কাউকেই হারিয়ে দিতে পারে। শুধু তা-ই নয় প্রতিপক্ষ কীভাবে খেলবে তা নাকি আগে থেকেই বুঝে যায় টোপিও।

ব্যাংকার রোবট নাউ

কীভাবে ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট খুলতে হয়, কীভাবে টাকাপয়সার হিসাব রাখবেন, তা জানাতে পারে রোবট নাউ। এটি এখন চাকরি করছে জাপানের সবচেয়ে বড় ব্যাংক টোকিও-মিৎসুবিশি ইউএফজে ব্যাংকে। দুই পায়ে চলতে সক্ষম এ রোবটটি ব্যাংকের নানা তথ্য দিয়ে সেবাগ্রহীতাদের সহায়তা করছে। নাউ আবার বহুভাষাবিদ—জাপানি, ইংরেজি আর চীনা ভাষায় কথা বলতে পারদর্শী।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*