বিচার ব্যবস্থার অতি সক্রিয়তা?

গণতন্ত্রে জনগণের ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত আইনসভা আইন তৈরি করে। সেই আইন মেনে কাজ করে প্রশাসন। সেটা করছে কিনা দেখার কাজ বিচার ব্যবস্থার। সংবিধানে বলা আছে, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশও আইন হয়ে যায়। কিন্তু গণতন্ত্র তখনই খর্বিত হয়, যখন এ ওর আঙিনায় ঢুকে পড়ে অতি সক্রিয়তা দেখায়। জরুরি অবস্থার সময় কেন্দ্রীয় সরকার সংবিধানের ১৯(ক) ধারায় প্রদত্ত মৌলিক নাগরিক অধিকার কেড়ে নিয়েছিল। তা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলাও হয়েছিল। সুপ্রিম কোর্ট তখন টুঁ শব্দটি করেনি। সুপ্রিম কোর্ট তখন কেন্দ্রীয় সরকারকে ভৎর্সনা করলে কিছুটা কাজ হতো। বিপরীত উদাহরণও আছে। বহু ক্ষেত্রে দেখা গেছে সম্ভাব্য গোলমাল এড়াতে প্রশাসন যা পদক্ষেপ নিয়েছে, তাকে বাতিল করেছে বিচার ব্যবস্থা। বিচার ব্যবস্থার বাণী, গোলমাল হবে এমন আগাম আশঙ্কা ঠিক নয়। বহু ক্ষেত্রে বিচার ব্যবস্থাই বলেছে, গোয়েন্দা পুলিশের কাছে আগে খবর ছিল না কেন? প্রশাসন যারা চালান, তাদেরই গোলমাল মোকাবিলা করতে হয়। উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে, গোলমাল এড়াতে প্রশাসনের নেওয়া ৩৬ ঘণ্টার বিশেষ ব্যবস্থাকে বিচার ব্যবস্থা যদি নাকচ করে, তাহলে কি সেটা অতি সক্রিয়তা হয় না? আজ যাঁরা বিসর্জন নিয়ে মামলার রায়ে হাসছেন, নানারকম বিরূপ মন্তব্য করছেন, কাল তাঁদেরও ভুগতে হতে পারে। কারণ, অতি সক্রিয় বিচার ব্যবস্থা গণতন্ত্রের পক্ষে মোটেই শুভ নয়।

দেবাশিস ভট্টাচার্য

২১.০৯.২০১৭

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*