আনসারউল্লার সদস্যরা এখন কলকাতায়, পুলিশি জেরায় উঠে এসেছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য

আনসারুল্লা, এই একটা নামই এখন দেশ তথা রাজ্যবাসির মুখে মুখে। সম্প্রতি খবরের শিরোনামে এসেছে বাংলাদেশের এই জঙ্গি দলটির নাম। যাদের কাজকর্ম দেখে কার্যত ভিরমি খাওয়ার জোগাড় রাজ্যের পুলিশ কর্মীদের। কিন্তু কারা এই আনসারুল্লা বাংলা টিম, তাদের উদ্দেশ্য কি, কেন তাদের কলকাতায় আসা? সব নিয়েই এবার আলোচনা করা যাক। সেনাবাহিনী থেকে পালিয়ে আসা মেজর সৈয়দ জিয়াউল হক জিয়া এই মুহূর্তে আনসারুল্লা বাংলা টিম (এবিটি) প্রধান৷ তার সম্পর্কে তথ্য দিতে পারে এই সন্দেহে কলকাতার শিয়ালদহ থেকে গ্রেফতার দুই বাংলাদেশি আল কায়দা জঙ্গি৷ সূত্রের খবর, ধৃতরা বাংলাদেশের নিষিদ্ধ সংগঠন এবিটি-র সঙ্গে জড়িত৷ সংগঠনটি আনসার আল ইসলাম নামেও পরিচিত৷ মঙ্গলবার কলকাতা স্টেশন থেকে দুই বাংলাদেশি জঙ্গি রিয়াজুল ইসলাম ওরফে সুমন ও সামসেদ মিয়া ওরফে তানভির ওরফে তুষারকে গ্রেফতার করা হয়। পরে পুলিশ জানায় ধৃতরা বাংলাদেশের আনসারুল্লা বাংলা টিমের (এবিটি) সঙ্গে জড়িত। এই সংগঠন বাংলাদেশে একাধিক ব্লগার ও মুক্তমনাকে খুনে জড়িত৷ কলকাতায় ধৃত দুই এবিটি জঙ্গিকে জেরা করে শীর্ষ বাংলাদেশি জঙ্গি নেতা মেজর জিয়া সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করছে পুলিশ৷ ইতিমধ্যে জানা গিয়েছে, ধৃত জঙ্গি তানভির একজন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার।
এসটিএফ সূত্রে খবর, বাংলাদেশের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ডিপ্লোমা করা সামসাদ উচ্চশিক্ষিত হওয়ায় তার ভারতে থাকতে ভাষাগত সমস্যা হয়নি৷ ভুয়ো আধারও কার্ড-সহ অন্যান্য পরিচয়পত্র তৈরি করেছিল সে৷
পুলিশ সূত্রে খবর, উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট থেকে ধৃত আল কায়দা জঙ্গিদের অস্ত্র সরবরাহকারী মনোতোষ দে আদতে বাংলাদেশি নাগরিক৷ মাত্র দেড় ঘণ্টার মধ্যেই সামান্য সরঞ্জাম দিয়েই বিস্ফোরক তৈরি করে ফেলে দুই বাংলাদেশি জঙ্গি। কিভাবে বোমা নিষ্ক্রিয় করতে হয়, তাও দেখাল তারা৷ যা দেখে এনআইএর গোয়েন্দাদের চোখ কপালে ওঠার জোগাড়৷ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ওই দুই জঙ্গি যে ২৬জনকে বিস্ফোরক তৈরির প্রশিক্ষণ দিয়েছে তাদের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য ইতিমধ্যেই সংগ্রহ করেছেন গোয়েন্দারা৷
যদিও লালবাজারের কলকাতা পুলিশের কাছে মনতোষ দাবি করেছে, মাছ ব্যবসার পাশাপাশি অতিরিক্ত টাকার লোভেই বেআইনি অস্ত্র ব্যবসা করত সে৷ জট যতই খুলছে, ততই প্রকাশ্যে আসছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। পুলিশ এখনও কিনারা করতে পারছে না তাদের আর কোনও চক্র ছলছে কিনা। এই জঙ্গি গোষ্ঠীর সঙ্গে আল কায়দার যোগাযোগ কতটা নিবিড় তাও জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। তারা কেন কলকাতায় এল, তাদের উদ্দেশ্য কি সব জানার চেষ্টা করছে পুলিশ আধিকারিকরা। সবরকম চেষ্টা চালালেও ঝুড়ি থেকে কখন আসল বিড়াল টা বেরোবে সেই দিকেই তাকিয়ে সবাই।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*