বিশ্বকাপ জিততে না পারাই ভালদেরামার আক্ষেপ

মুম্বাই এসেছিলেন ফিফা অনূর্ধ্ব ১৭ বিশ্বকাপের প্রচারে। মাঠেও নেমেছিলেন লেজেন্ডস ম্যাচে। সেখান থেকেই সোজা কলকাতা, দিয়েগো ভার্সাস দাদা ম্যাচের জার্সি প্রকাশ অনুষ্ঠানে। শুক্রবার ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭ কলম্বিয়ার কিংবদন্তী ফুটবলার কার্লোস ভালদেরামা প্রথমে যান ইকোস্পেসে ফ্যানাটিক স্পোর্টস মিউজিয়ামে। মিউজিয়াম ঘুরে দেখা, জার্সি প্রকাশের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, অনূর্ধ্ব ১৭ বিশ্বকাপ নিঃসন্দেহে ভারতীয় ফুটবলের উন্নতি ঘটাবে। কেন না, বিশ্বকাপ চলাকালীন ফুটবলারদের দিকে থাকবে সারা বিশ্বের নজর। পাশাপাশি উন্নত পরিকাঠামো কাজে লাগিয়ে এগিয়ে যাবে ভারতের ফুটবল। মারাদোনা ম্যাচ নিয়ে কথার ফাঁকেই প্রশ্ন উঠল, পেলে না মারাদোনা কে সেরা? অনুবাদকের মাধ্যমে ভালদেরামা জানিয়ে দিলেন, পেলে-মারাদোনার মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে বলে জানি। তবে মারাদোনাই এক নম্বর, সর্বশ্রেষ্ঠ। আমি নিজে তাঁর বিরুদ্ধে খেলেছি বলেই বলছি। আর মেসি-রোনাল্ডো? এ ক্ষেত্রেও মেসিকেই বর্তমানের সেরা ফুটবলার হিসেবে বেছে নিচ্ছেন ভালদেরামা। কলম্বিয়ার সর্বকালের সেরা হিসেবে বেছে নিলেন অ্যাসপ্রিয়াকে। রডরিগেজকে নিয়ে বললেন, খুব ভালো ফুটবলার। দারুণ খেলছে। আসন্ন রাশিয়া বিশ্বকাপে কাউকে এখনই ফেভারিট হিসেবে বেছে না নিলেও ভালদেরামা নিশ্চিত কলম্বিয়ার যোগ্যতা অর্জনের ব্যাপারে। তাঁর জীবনের সেরা দুই ম্যাচ হিসেবে বেছে নিলেন ১৯৯০ বিশ্বকাপে জার্মানির সঙ্গে ১-১ ড্র আর ১৯৯৩-এ বুয়েনস আইরেসে আর্জেন্টিনাকে ৫-০ গোলে হারিয়ে বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত করাকে। বিশ্বকাপ ছুঁতে না পারার আক্ষেপও ধরা পড়ল ভালদেরামার গলায়। তাঁকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, জীবনের সেরা অপ্রাপ্তি কী? ভালদেরামা বললেন, বিশ্বকাপ জিততে না পারা। বিশ্বকাপ জিততে পারাটা সহজ ব্যাপার নয়। খুবই কঠিন। ঘুরিয়ে ফিরিয়ে ব্রাজিল, ইতালি, জার্মানি, আর্জেন্টিনার মতো দেশগুলিই বেশি বিশ্বকাপ জিতেছে। 

মাঝেমধ্যেই প্রকাশ পাচ্ছিল মারাদোনার সঙ্গে তাঁর অটুট বন্ধুত্বের কথা। সেরা স্মৃতি? মারাদোনা তাঁর বিদায়ী ম্যাচে ভালদেরামাকে খেলার আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন, আবার নিজেও মাঠে নেমেছিলেন ভালদেরামার বিদায়ী ম্যাচে। এদিন মোহনবাগান মাঠে গিয়েও বল পায়ে ম্যাজিক দেখালেন ঝাঁকরা সোনালি চুলের চেনা ভালদেরামা। শিলটন পালকে পরাস্ত করে বল জালে জড়িয়ে বললেন, এভাবে পেনাল্টি মারার অনুরোধ পেয়ে চাপেই ছিলেন। কেন না, গোল মিস করলে সেটাই তো হতো খবর। মোহনবাগান মাঠ থেকে খুব অল্প সময়ের জন্যও এলেন ইডেনে। সেখানে সাক্ষাত হলো প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে। ভারতে আসার আগে এখানকার খেলাধুলা সম্পর্কে খোঁজখবর নিতে গিয়েই জেনেছিলেন ক্রিকেট এ দেশে সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা। সৌরভের সঙ্গে দেখা করে স্বভাবতই খুশি দেখাল ভালদেরামাকে। সৌরভ তাঁকে বলেন, আমি আপনার খেলা দেখতাম। এই ইডেনে আগে ফুটবল খেলা হতো, পেলেও খেলে গিয়েছেন। পরদিন আদিত্য স্কুল অব স্পোর্টসে গিয়ে উঠতি ফুটবলারদের পরামর্শও দেন ভালদেরামা। সন্ধেবেলা সিটি সেন্টারে এক অনুষ্ঠানে পুজোর আমেজ গায়ে মেখে ঢাকও বাজান এই কিংবদন্তী।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*