থিমের মাতামাতি নেই আছে ভক্তি

সোমা মুখার্জি : সৃষ্টি প্রলয়ের অধিকারিণী মা চণ্ডীর ধরণীর বুকে চিন্ময়ীরূপে আবির্ভাব। আকাশে-বাতাসে যখন পুজোর গন্ধ, কাশফুলের দোলায় মত্ত প্রকৃতি, সেখানে মা দুর্গার ভয়ংকরী রূপের কথা মনে করিয়ে দেয় বিহারবাসীকে। বিহার রাজ্যে বন্যা পরিস্থিতি এখনও ভয়ংকর রূপের ছাপ রেখে গেছে। গ্রামে-গঞ্জে বহু মানুষ এখনও গৃহহীন। স্বাভাবিক জীবনযাত্রা থেকে তারা এখনও বিমুখ। সরকারি সাহায্য সবার কাছে পৌঁছোতে দেরী হয়েছে। অভিযোগ পাল্টাটা অভিযোগের খেলা চলছে। এত কিছুর মধ্যেও মা দুর্গার আরাধনা করতে ভোলেনি বিশ্ববাসী। বিহার রাজ্যও পিছিয়ে নেই মাতৃ আরাধনায়। আগামী সপ্তাহ থেকেই শুরু হচ্ছে নবরাত্রী। মা দুর্গার আরাধনায় নবরাত্রীর ব্রত পালন করে থাকেন অবাঙালিরা। তবে বিহার রাজ্যের বাঙালিরা মা দুর্গার আরাধনা করেন পশ্চিমবঙ্গের বাঙালিদের মতই। ষষ্ঠীর বোধন থেকে বিজয়া দশমীর বিধি মেনে পুজো হয় পাটনার বহু প্যাণ্ডেলে। প্রবাসী বাঙালিদের দ্বারা পরিচালিত পূজা কমিটিগুলি মাতৃ আরাধনায় ত্রুটি রাখেন না।

পাটনার ১২৫ বছরের পুজো বাঙালি আখড়ার পুজো, ৭৫ বছরের পুজো বাঙালি কালীবাড়ির দুর্গাপুজো, আদালত গঞ্জ ৭০ বছরে পা দিল। সবচেয়ে আকর্ষণীয় ও জনপ্রিয় পাটনা রামকৃষ্ণ মিশনের দুর্গাপুজো। পঞ্জিকা মেনে ভক্তি ভরে পুজো হয় রামকৃষ্ণ মিশনে। ১৯২৬ সাল থেকে মিশনে দুর্গাপুজো হয়ে আসছে। বাঙালি-অবাঙালি ভক্তদের ভিড় থাকে চোখে পড়ার মতো। একচালা সাবেকি মূর্তির পুজো হয় রামকৃষ্ণ মিশনে। পাটনার কোনও পুজোতেই থিমের চমকদারী থাকে না। ভক্তিই হলো আসল উপাদান এখানকার পুজোগুলিতে।

মা দুর্গার ন-টি রূপের আরাধনা অবাঙালিরা করে থাকেন নবরাত্রী ব্রতর মাধ্যমে। তবে বাঙালিদের পুজেরা রীতিও তারা মেনে চলেন। এই সময় পাটনা শহরে আমিষেভোজীদের নিরামিষ হতে হয়। এখানে অবশ্য পশ্চিমবঙ্গর সঙ্গে অমিল শুধু এইটুকুই।

শরৎ ঋতু যে ভারতবাসীদের কাছে উৎসব নয় এক ভক্তির মিলনের ঋতু তা বলাই বাহুল্য।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*